টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম গঠন করে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে কমিউনিটি পর্যায়ে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়ে ও লকডাউনে যানবাহন সংকটের কারণে হাসপাতালে আসতে না পারা রোগীদের বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করে স্বাস্থ্য সেবা দিবে এই হাসপাতালটি।
শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের লাইব্রেরিতে কুমুদিনী উইমেন্স মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল হালিম সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। এ সময় কুমুদিনী হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এ বি এম আলী হাসান, সহকারী মহাপরিচালক অনিমেষ ভৌমিক, মেট্রন সিস্টার দিপালী পেরেলা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. আব্দুল হালিম জানান, ১৯৪৮ সালে দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা প্রতিষ্ঠিত ১০৫০ শয্যার এই হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ে ৭শ থেকে ৮শ রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। ভর্তি রোগীদের বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ১৫শ’ থেকে দুই হাজার রোগী আধুনিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে অল্প খরচে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শমসহ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। তাছাড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবার আওতায় ধাত্রী বিদ্যা, পরিবার-পরিকল্পনা, ফিস্টুলা এবং স্বাস্থ্য বিধান সম্পর্কিত সেবাও দেয়া হয় এই হাসপাতালে।
কিন্ত করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের এই সময়ে সাধারণ রোগী যাদের চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন তারাও সংক্রমনের ভয়ে হাসাপাতালে আসতে ভয় পাচ্ছেন। উপরন্তু লকডাউনে যানবাহনের অভাবে হাসপাতালে রোগীদের আসা যাওয়ার ক্ষেত্রেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে সংকটাপন্ন রোগী যেমন গর্ভবতী মা যাদের নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন তারাও হাসপাতালে আসতে পারছেন না। এই সংকটকালে কুমুদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় রোগীদের সেবা দিবে। এজন্য যাদের চিকিৎসা সেবা প্রয়োজন তাদের চিকিৎসা সেবার নিমিত্তে ২ জন ডাক্তার ২ জন নার্স ও ২ জন স্বাস্থ্যকর্মীর সমন্বয়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে এ রকম ২টি মেডিকেল টিম মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে একাধিক স্থানে ক্যাম্প স্থাপন করে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেবে।
শনিবার উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে টেলিমেডিসিন ক্যাম্পের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হবে। এই ক্যাম্পে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক কোভিট-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৮৭ বছরে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়সহ বিভিন্ন দুঃসময়েও কুমুদিনী হাসপাতাল যেভাবে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমের এই সময়েও কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে বলে ডা. আব্দুল হালিম সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।