টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ১০ নং ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভাতার কার্ড বিতরণে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইউপি সদস্য মফিজের হাতে নগদ নারায়ন তুলে না দিলে মেলে না বয়স্ক, বিধবা ও মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড। এছাড়া প্রতিবন্ধি কার্ডের বিনিময়ে অর্থ নেয়ারও একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ অভিযোগটি ফাইলবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ভূক্তভোগীদের মধ্যে।
স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধুবড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ০৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. মফিজ উদ্দিন বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড বিতরণে ব্যক্তিভেদে ৩-৬ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে জানান ভাতাভোগীরা। তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারলে ভাতা পাওয়ার উপযোগী হওয়া সত্যেও মেলে না ভাতার কার্ড।
শনিবার সকালে সরেজমিন ধুবড়িয়া পশ্চিম পাড়া গ্রামে গিয়ে একাধিক ভাতাভোগীদের সাথে কথা বললে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
ওই গ্রামের জোহরা, সেকান, রেহেনা, ফারুক ও সেন্টু অভিযোগ করে বলেন, ভাতাভোগীদের কার্ডে নতুন নাম্বার বসানো হবে বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০-৬০ টাকা নিয়েছে ইউপি সদস্য মফিজ।
ভূক্তভোগী জোহরা আক্ষেপের সূরে বলেন, তার প্রতিবন্ধি কার্ড নবায়ন করে দেওয়ার কথা বলে ২৭০০ টাকা নেয়। কিন্তু প্রায় দশমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও ভাতার কার্ড পাইনি। এ ঘটনায় গত ১৯ মে এলাকাবাসীর পক্ষে মো. রফিকুল ইসলাম ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওইদিনই অভিযোগটির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের নিকট প্রদান করেন। এদিকে এক মাসের অধিক কাল পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ভূক্তভোগীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
ইউপি সদস্য মফিজের বিরুদ্ধে আনীত এ সকল অভিযোগ সম্পর্কে সেলফোনে জানতে চাইলে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, কার্ডধারী কোন ভাতাভোগীর কাছ থেকে আমি কোন টাকা পয়সা নেয়নি। অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনও সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম এ প্রতিদেককে জানান, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি তদন্তে প্রমানিত হলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সৌরভ তালুকদার বলেন, ইউপি সদস্য মফিজের ভাই মৃত্যুবরণ করায় তদন্তে বিলম্বিত হচ্ছে। তবে আগামী মাসের যেকোন সময় তদন্ত সম্পন্ন করা হবেও বলে তিনি জানান।