‘ছুরি, বটি, কাঁচি ধার করাইবেন?’ মহল্লার গলিতে জোরালো কণ্ঠে উচ্চারিত কথাটি শোনেননি কংক্রিটের নগরীতে এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। প্রাচীনকাল থেকে ‘শান মেশিন’ কাঁধে নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা এ কথা বলেন। বিংশ শতাব্দির শুরুর দিকেও শান মেশিনের খুব প্রচলন ছিল।
দেখা যেত, যুবক কিংবা বয়স্ক পুরুষ কাঁধে করে শান মেশিন নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেতেন। গৃহস্থলির কাজে ব্যবহৃত ভোতা বটি, দা, কাঁচি ধার করতেন শান মেশিন দিয়ে। পায়ে প্যাডেল ঘুরিয়ে একটি পাথরের মতো ঘূর্ণায়মান গ্রিন্ডারের সঙ্গে ঘঁষে ধার করা হতো।
তবে প্রযুক্তির আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ কাজ করে একসময় যারা স্বচ্ছল জীবনযাপন করেছেন। তারা আজ বাধ্য হয়ে এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। নগর জীবনে এখন আর শানম্যানদের দেখা মেলে না। তবে পবিত্র ঈদুল আজহার সপ্তাহখানেক আগে থেকে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় শান মেশিন নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে।
তেমনই একজনের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি মহিদুর রহমান (৬০)। যুবককাল থেকে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। তবে এখন সিজনাল হিসেবে এ কাজ করেন তিনি। কুরবানির ঈদ এলেই নিজের পুরোনো শান মেশিনটি নিয়ে বের হন।
তিনি জানান, এখন আর আগের মতো শান মেশিনে মানুষ ছুরি, চাপাতি ধার করে না। ইলেক্ট্রনিক গ্রিন্ডার মেশিন দিয়ে মানুষ যন্ত্র ধারের কাজ করেন। তবে কুরবানির ঈদ এলে কিছু কাজ পাওয়া যায়, তবে তা নেহায়েত কম।
কুরবানির এ মৌসুমে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় অনেক শানম্যান মাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ান। অনেকে খালি গলায় উচ্চস্বরে আওয়াজ করেন। কেউ কেউ বারান্দা থেকে ডাক দিয়ে বাড়ির নিচে বটি, দা, চাপাতি, ছুরি ধারের কাজ করান। এভাবেই ঢিমেতালে চলছে পেশাটি।
সূত্র: jagonews24.com/feature