ডেস্ক নিউজ : স্মার্টফোন ব্যবহার করলে সময়ের সঙ্গে ব্যাটারির অবস্থা যে খারাপ হবে, সেটা স্বাভাবিক।
তবে নিশ্চয় চান না সেটা দ্রুত হোক। স্মার্টফোন চার্জ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যে সংশয় আমাদের মধ্যে দেখা যায় সেটি হলো, রাতভর ফোনে চার্জার লাগিয়ে রাখা কি ঠিক?
কিংবা স্মার্টফোন শতভাগ চার্জ করার সঙ্গে সঙ্গে কি চার্জার খুলে ফেলতে হবে? চলুন আমরা আজ সে প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি।
ফোন নির্মাতারা কী বলে?
স্মার্টফোন কবে তৈরি হয়েছে, কেবল সেটার ওপর ব্যাটারির আয়ুষ্কাল নির্ভর করে না। আরও অনেক ব্যাপার-স্যাপার আছে।
যেমন তাপমাত্রা অত্যধিক ওঠানামা করা কিংবা আপনার চার্জ করার ধরন।
আমাদের ফোনের লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিগুলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলনামূলক কম চার্জ ধারণ করে। সে কারণেই পুরোনো ফোনে দেখবেন সচরাচর চার্জ বেশিক্ষণ থাকে না।
দীর্ঘক্ষণ চার্জ করার ব্যাপারে অ্যাপলের ভাষ্য হলো, আইফোন দীর্ঘ সময় পূর্ণ চার্জ অবস্থায় থাকলে ব্যাটারির ক্ষতি হতে পারে।
অ্যান্ড্রয়েড-চালিত স্মার্টফোন তৈরি করে স্যামসাং। তারাও একই কথা বলে থাকে, ‘দীর্ঘ সময় ধরে কিংবা রাতভর আপনার ফোন চার্জারের সঙ্গে যুক্ত রাখবেন না।’
হুওয়ায়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জের পরিমাণ যতটা সম্ভব মাঝামাঝি (৩০ থেকে ৭০ শতাংশ) রাখার চেষ্টা করুন, তাতে ব্যাটারির আয়ুষ্কাল বাড়বে।’
অর্থাৎ আপনার ফোন চার্জ করুন, তবে শতভাগ নয়। অর্থাৎ পূর্ণ চার্জ হয়ে গেলে চার্জারের সঙ্গে যুক্ত করে রাখার দরকার কী?
চার্জ পূর্ণ হলে নিজ থেকে ব্যাটারি চার্জ করা বন্ধ করে দেবে আপনার স্মার্টফোন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৯৯ শতাংশে নামার পর তা শতভাগ হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নিতে পারে। আর এ ঘটনার বারংবার পুনরাবৃত্তি ব্যাটারির আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয়।
ফোনের সুবিধা ব্যবহার করুন
আইওএস ১৩ এবং পরবর্তী সংস্করণগুলোতে ‘অপটিমাইজড ব্যাটারি চার্জিং’ অপশন আইফোনে পূর্ণ চার্জ থাকার সময় কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
সেটি সচল করার পর আপনার আইফোন চার্জ করার অভ্যাস, অর্থাৎ সাধারণত কখন ও কতক্ষণ চার্জে রাখেন, তা পর্যবেক্ষণ করবে।
এরপর আপনার প্রয়োজন না হলে সচরাচর ৮০ শতাংশের পর চার্জ করা বন্ধ করে দেবে।
অপশনে পরিবর্তন আনতে চাইলে আইফোন চার্জে থাকা অবস্থায় ‘অপটিমাইজড ব্যাটারি চার্জিং’ পপ-আপে ট্যাপ করে কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন।
সাধারণত আগে থেকেই অপশনটি সচল থাকে। তবু চাইলে দেখে নিতে পারেন। সে জন্য যেতে হবে সেটিংস>ব্যাটারি>ব্যাটারি হেলথ>অপটিমাইজড ব্যাটারি চার্জিং অপশনে।
আইফোন না হোক, যে ব্র্যান্ডের ফোন আপনার হাতে আছে, সেটির অপশন কাজে লাগিয়েই ব্যাটারির আয়ু দীর্ঘ করতে পারেন।
আগে দেখে নিন, ফোনের ব্যাটারি সেটিংসে গিয়ে দেখুন কী কী অপশন আছে।
চাইলে অ্যান্ড্রয়েডে ‘অ্যাকুব্যাটারি’ অ্যাপ নামিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাটারির অবস্থা পর্যবেক্ষণে সাহায্য করবে সেটি।
কখন চার্জার যুক্ত করতে হবে আর কখন খুলতে হবে, তা দেখিয়ে দেবে অ্যাপই।
আরও যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে পারেন :
পুনরায় চার্জ করার জন্য ব্যাটারি শূন্যের ঘরে নামিয়ে আনার কোনো দরকার নেই। আপনার সুবিধামতো সময়ে চার্জ করুন।
ব্যাটারি পার্সেন্টেজ নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করার কোনো মানে হয় না।
ফোন যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন। গরম হলে তা ব্যাটারির ওপরও প্রভাব ফেলে।
সুতরাং চার্জ করার সময় বালিশের নিচে রাখবেন না। রোদে বা বেশি শীতল পরিবেশে রাখার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।
যে অ্যাপগুলো ফোন গরম করে, সেগুলোর ব্যবহারও কমিয়ে আনুন। সূত্র – প্রথম আলো; সম্পাদনা – অলক কুমার