কালিহাতী সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে অবৈধভাবে বাংলা ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি অসাধু চক্র।
আর সেই বালু বিক্রি করতে নদীতে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
এতে করে যেমনি হুমকির মুখে রয়েছে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ী, বিদ্যালয়, বাজার ও বিভিন্ন স্থাপনা; তেমনি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
গত কয়েক বছর যাবত অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে বর্ষা মৌসুমে নদী তীরবর্তী বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
পরিবেশবাদী ও স্থানীয় ভূক্তভোগীরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বালু খেকোদের প্রকাশ্য বক্তব্য, তাদের এই ব্যবসার সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা ও এমপি সাহেবের লোকজন সাথে জড়িত।
সরেজমিনে, কালিহাতী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত লৌহজং নদীর গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের যোকারচর এলাকায় নদীতে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে শতাধিক বাংলা ড্রেজার বসিয়ে ও ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন।
অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হীনস্বার্থে প্রশাসনিক নির্দেশনা অমান্য করে সরকারি নিলামকৃত বালুর ভিটি কেটে রাস্তা নির্মাণ ও বালু বিক্রি করা হয়েছে।
অবৈধ বাংলা ড্রেজার ও ভেকু বসিয়ে বালু উত্তোলন করে প্রতিদিন শত শত ট্রাক, ড্রাম ট্রাকে বালু বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
যার নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় মৃত চান মাহমুদের ছেলে মাছুদ সরকার ও মৃত বাহার আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম মেম্বার প্রমুখ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ইতিপূর্বে ওই স্থানে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদকারীদের উপর হামলা ও বাড়ী ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করে কোন লাভ হয়নি।
বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আপনারা সংবাদ করলেই কি হবে? শুধু জায়গামত তাদের খরচটা বাড়িয়ে দেবে। তাহলে আর কোন ব্যবস্থা হবেনা।
যদি কখনো ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের পরিকল্পনা হয়, তবে বালুঘাটে যাওয়ার আগেই সেখানে খবর চলে যায়।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারীদের সাথে ফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কেউ রিসিভ করেননি।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য –
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমার জানামতে আওয়ামী লীগের কেউ বালু ব্যবসার সাথে জড়িত নেই।
তবে কেউ কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা কোন জনপ্রতিনিধির নাম ব্যবহার করে থাকলে তা একান্তই তাদের।
বিষয়টি আমি আইন শৃঙ্খলার মিটিং এ উপস্থাপন করেছি।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, নদীতে বাঁধ দেয়ার এখতিয়ার কারোর নেই। আমি ঢাকাতে আছি। এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: নাজমুল হুসেইন বলেন, আমি কালিহাতীতে যোগদানের পর অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে আসছি।
এসিল্যান্ড বর্তমানে প্রশিক্ষণে আছেন। আমাকে একা বিষয়গুলো দেখতে হয়। অবৈধ সকল বিষয়ে অভিযান অব্যাহত থাকবে। সম্পাদনা – অলক কুমার