অলক কুমার : টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছা মতো অফিস পরিচালনা করেন।
তিনি টাঙ্গাইলে যোগদান করার পর থেকেই এই ভাবে অফিস পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া তিনি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথেও খারাপ আচরণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারী কাজ নিয়ন্ত্রণ, ভাগ বাটোয়ারার ও নিজেই ঠিকাদারী কাজ করারও অভিযোগ রয়েছে।
তবে এই সব অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করতে তিনি সংবাদকর্মীদের ফোন রিসিভ করেননি।
এইসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সরেজমিনে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগে প্রবেশে করতে গেলেই বাঁধার সম্মুখীন হতে হয় সওজ অফিসের গেটে দায়িত্বরত রঞ্জিত সূত্রধরের।
তাকে নিযুক্ত করা হয়েছে সওজ এর প্রধান ফটক পাহারার দায়িত্বে।
অভিযোগের সত্যতা :
এই বিষয়ে রঞ্জিত সুত্রধর নামের ওই কর্মচারী বলেন, আমাকে গেইটের সামনে সার্বক্ষণিক পাহারা দিতে হয়, প্রকৃতির ডাক এলেও অন্য কাউকে প্রধান ফটকে বসিয়ে কাজ সারতে হয়; এমনটা আমার চাকুরীর জীবনের ৩৫ বছরেও দেখিনি। এ যেন ভুতের রাজ্য।
তিনি জানান, গত দুইমাস যাবত গেট বন্ধ করে রাখা হয়। এখানে অনুমতি ছাড়া ঢোকা নিষেধ। অফিসে ঢুকতে গেলে নির্বাহী স্যারের অনুমতি লাগবে।
তিনি আরো জানান, কয়েকদিন আগে টাঙ্গাইলের এক এমপি (সংসদ সদস্য) (সম্মান রক্ষার্থে নাম প্রকাশ করা হলো না) অফিসে আসেন।
তখন তিনি এক্সেন (নির্বাহী প্রকৌশলী) স্যারের অনুমতি নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী জানান, এই নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসের সবার সাথে অশোভন আচরণ করেন; তিনি নিজের মতো করে কাজ করেন।
তারা আরো জানান, তিনি নিজেই একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তিনি তার পছন্দমতো ঠিকাদার ও তার এক বন্ধুকে দিয়ে সকল কাজ করান।
কয়েকদিন আগেও “সাইন সিগনাল” এর একটি কাজ নওগাঁর আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে নিয়ে তার বন্ধু মাস ইঞ্জিনিয়ারিং এর স্বত্ত্বাধিকারী মাহবুব ইসলামকে দিয়ে করান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ঠিকাদার জানান, দীর্ঘদিন যাবত ঠিকাদারী করি; সড়ক ও জনপথ বিভাগের তালিকাভূক্ত ঠিকাদার।
আমরা অফিসে ঢুকতে গেলেও আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। আর আপনারা তো সাংবাদিক; আপনাদের তো ঢুকতে দেবেই না।
এই বিষয়ে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগে কর্মরত প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ২২ মার্চ (মঙ্গলবার) বিকেল ৪টা ১৭ মিনিটে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন (০১৭২৫১৫৫১৮৯) থেকে কল দিয়ে বিষয়টি জানতে চান ও সংবাদ প্রকাশ না করা অনুরোধ জানান।
যথাযথ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য :
কেন তিনি অফিসের প্রধান ফটকে দারোয়ান বসিয়ে সকল শ্রেনির মানুষের সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করছেন? জানতে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহা. আলিউল হোসেনের ০১৭৩০৭৮২৬২৮ নম্বরে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুর ২টা ৪৩, ২টা ৪৪, ৪টা ০২ ও ৪টা ০৩ মিনিটে চার বার ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অফিসের প্রধান ফটক বন্ধ রাখার বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, এটা তিনি পারেন না।
সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার নিশ্চিত করতে আমি টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর নিকট জানতে চাইবো।
তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।