ঘাটাইল প্রতিনিধি : আগের দিনের হিসাবে সরকারি গুদাম থেকে গায়েব ১২৩০ কেজি চাল।
আর পরের দিনের হিসাবে মাত্র ৪২০ কেজি কম পাওয়া যায় ।
তাহলে ৮১০ কেজি চাল কীভাবে গুদামে এলো?
ইউপি চেয়ারম্যান জানালেন রাতে গোপনে গুদামে চাল ঢুকিয়েছেন ডিলার; তারপরও মেলাতে পারেননি হিসাব।
সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণকারী ঐ ডিলারের নাম তারিকুল ইসলাম উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের ব্রাহ্মণশাসন এলাকায় বিতরণের দায়িত্বে আছেন।
জানা গেছে, দিগড় ইউনিয়নে ১১ এপ্রিল সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ শুরু হয়েছে।
১২ এপ্রিল দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা গুদামে নির্ধারিত চালের চেয়ে পরিমাণে কম দেখতে পেয়ে বিতরণ বন্ধ করে দেন।
পরে সংশ্লিষ্ট ডিলার, স্থানীয় ইউপি সদস্যের সমন্বয়ে চাল পরিমাপ করে ১২৩০ কেজি ঘাটতি পড়ে।
কাগজ-কলমে হিসাব লিখে সাক্ষী হিসেবে ইউপি সদস্য এবং ডিলারের সই নেওয়া হয়। বিষয়টি ইউএনও ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়।
পরে গতকাল বুধবার গুদামের চাল পরিমাপ করে মাত্র ৪২০ কেজি কম পান উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।
ইউপি চেয়ারম্যান ও ডিলারের বক্তব্য –
দিগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন ফনি বলেন, বিষয়টি জানার পর গুদামে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন।
ইউএনওকে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তার দাবি, রাতে ওই ডিলার কোথাও থেকে চাল এনে ১২৩০ কেজির ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করেছেন; তাতেও হিসাব মিলছে না।
ডিলার তারিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা গিয়ে চালের হিসাব নিয়ে এসেছেন তাতে তেমন কোনো গরমিল নেই।
আপনার সামনেই হিসাব অনুযায়ী ১২৩০ কেজি চাল কম পান স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ট্যাগ অফিসার এবং সেই হিসাবের কাগজে আপনি সইও করেছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই দিন আমার মাথা ঠিক ছিল না।’
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের বক্তব্য –
সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, ‘প্রথম দিন কম পেলাম ১২৩০ কেজি, পরের দিন সকালে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা কম পেলেন ৪২০ কেজি চাল।
একই দিন বেলা ৩টার দিকে চাল পরিমাপ করে কম পাওয়া গেল ১০০ কেজি। কী হচ্ছে কিছু বুঝতে পারছি না।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা বলেন, গুদামে গিয়ে ৩০ কেজি ওজনের ১৪ বস্তা, অর্থাৎ ৪২০ কেজি চাল কম পাওয়া গেছে। কিন্তু ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ গুডুর তথ্যমতে গুদাম থেকে উধাও হওয়া চালের অধিকাংশ বস্তাই ছিল ৫০ কেজির।
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিয়া চৌধুরী বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ট্যাগ অফিসার) বিষয়টি লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।