ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চলতি বছরের ৮ আগস্ট সেই সরকারের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে সরকারের ১২টি বড় অর্জনের কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এসব সাফল্যের তালিকা প্রকাশ করেন। নিচে উল্লেখযোগ্য অর্জনগুলো তুলে ধরা হলো:
১. শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা জুলাই বিপ্লবের পর দেশে ফিরে এসেছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। নৈতিক নেতৃত্ব এবং উদার দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সহিংসতার বদলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ তৈরি হয়েছে।
২. অর্থনীতির পুনরুদ্ধার খাদ্য মূল্যস্ফীতি অর্ধেকে নেমে এসেছে, সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৮.৪৮ শতাংশে। রেমিট্যান্সে রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলার, রপ্তানি বেড়েছে ৯ শতাংশ, টাকার মান বেড়েছে এবং ব্যাংক খাত স্থিতিশীল হয়েছে।
৩. বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন, দ্বিগুণ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (FDI), চীনের বিনিয়োগ আগ্রহ বৃদ্ধি এবং হানদা গ্রুপের ২৫ কোটি ডলারের বিনিয়োগে ২৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি।
৪. রাজনৈতিক সংস্কার ও ‘জুলাই সনদ’ ৩০টির বেশি দলের অংশগ্রহণে জাতীয় ঐক্য, এবং ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন যা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করছে এবং ফ্যাসিবাদের পুনরাগমন রোধে সহায়ক হবে।
৫. জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার শুরু মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, ইতোমধ্যে শেখ হাসিনাসহ চারটি বড় মামলার বিচার চলছে।
৬. নির্বাচন পরিকল্পনা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা। প্রবাসী, নারী এবং তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ।
৭. আইন ও বিচার সংস্কার পুলিশে মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম, জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ; বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত। গ্রেপ্তারকৃতদের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারের জানানো বাধ্যতামূলকসহ ডিজিটাল জিডির সুবিধা চালু।
৮. সংবাদমাধ্যম ও ডিজিটাল স্বাধীনতা সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা।
৯. পররাষ্ট্রনীতি পুনর্গঠন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইইউসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক, সার্ক পুনরুজ্জীবন এবং আসিয়ান সদস্যপদের উদ্যোগ।
১০. প্রবাসী ও শ্রমিক কল্যাণ ভিসা সহজীকরণ, শ্রমিকদের বৈধতা প্রদান, জাপান, ইতালি, কোরিয়া, সার্বিয়ায় কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ এবং প্রশিক্ষণ বৃদ্ধিতে নজরদারি।
১১. বিপ্লবীদের পুনর্বাসন ৭৭৫ শহীদ পরিবারের মাঝে ১০০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র, ১৩ হাজার ৮০০ আহতকে ১৫৩ কোটি টাকার সহায়তা ও বিদেশে চিকিৎসা সেবা প্রদান।
১২. সামুদ্রিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন বঙ্গোপসাগরকে ‘জলভিত্তিক অর্থনীতি’ হিসেবে ঘোষণা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং গভীর সমুদ্র মৎস্য প্রকল্পে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব।