নোয়াখালীর সুবর্ণচরে একাধিক মামলার আসামি আবুল কালাম সফি বাতাইন্নাসহ (৬০) ২১ জনকে আটক করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চরজুবিলী ইউনিয়নের জিয়ার চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সফি ও তার চতুর্থ স্ত্রী হাসিনা বেগমকে (৫০) আটক করে যৌথ বাহিনী। এ ছাড়া হাতিয়া থেকে আটজন, সুধারাম থেকে চারজন, বেগমগঞ্জ থেকে দুইজন, চাটখিল থেকে তিনজন, কোম্পনিগঞ্জ থেকে একজনকে আটক করা হয়। নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড জবস) মো. ইব্রাহিম অভিযানে ২১ জন টকের কথা নিশ্চিত করেন।
চর জব্বার
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন মিয়া জানান, সফি দুই যুগের বেশি সময় ধরে নোয়াখালীর দক্ষিণাঞ্চলে রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অপরাধের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। ২০০০ সালের দিকে দক্ষিণের সব থেকে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল উজাড় করে গড়ে তুলেছিলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, খাস জমি দখল করে বিক্রিসহ অসামাজিক কর্মকাণ্ড ছিল তার নিত্য দিনের কাজ।
২০০৩ সালের দিকে তিনি গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে এসে আবার রাজনৈতিক আশ্রয়ে হয়ে উঠেন ভূমিহীন নেতা। তিনি আরো জানান, সফির সঙ্গে প্রধান কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তার জামাতা কুখ্যাত সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতির মামলার আসামি জসিম উদ্দিন রায়হান প্রকাশ রানা। পরে স্থানীয় লোকজনকে জিম্মি করে রানা হয়ে যায় ইউপি মেম্বার। জামাই-শ্বশুর মিলে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আশ্রয়ে গড়ে তুলেন নিজেদের আধিপত্যের বলয়।
তিনি বলেন, ১৫ বছরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে সাহস করেনি পুলিশ। তাদেরকে ধরতে পুলিশ তার এলাকায় গেলেই মসজিদের মাইকে ডাকাত ডাকাত বলে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করা হতো। আবার আওয়ামী লীগের নেতাদের হুমকি মোকাবেলা করতে হতো প্রশাসনকে।
তিনি জানান, সফিকে গ্রেপ্তারের জন্য তার আস্তানায় অভিযান দিলে তার অনুসারীরা মসজিদের মাইকে ডাকাত ডাকাত বলে যৌথ বাহিনীকে হামলা করার চেষ্টা করে। পরে সু-কৌশলে তার স্ত্রীসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, ভূমিদখল, আগ্নেয়াস্ত্র ও বন মামলা রয়েছে। চর জব্বার থানা ছাড়াও একাধিক থানায় মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা করা হয়েছে। সফি ও হাসিনাকে অস্ত্র মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।