সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিপুল সম্পদের অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে এসেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাদের তদন্ত প্রতিবেদন শিগগিরই দাখিল করে মামলা রুজু করতে যাচ্ছে। দুদকের সূত্রে জানা গেছে, আছাদুজ্জামান ও তার পরিবারসহ পাঁচ আত্মীয়ের ২০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
উত্তরা থানা ও খিলগাঁও থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলায় বর্তমানে জেল খাটছেন আছাদুজ্জামান মিয়া। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, সাবেক কমিশনারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে।
আছাদুজ্জামান মিয়া দীর্ঘ সময় ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিরোধীদলের আন্দোলন দমনে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন। ২০১৯ সালে অবসর নেওয়ার পরও তাকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জাতীয় নিরাপত্তা সেলে বিশেষ দায়িত্বে পদায়ন করা হয়। অবসর নেওয়ার পর সার্ভিস বেনিফিট হিসেবে পৌনে দুই কোটি টাকা পাওয়া সত্ত্বেও তার নামে ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর ও ফরিদপুরে ফ্ল্যাট, প্লট ও জমিসহ বিপুল অবৈধ সম্পদের হদিস পাওয়া গেছে।
দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, আছাদুজ্জামান উত্তরা, পূর্বাচল, নিকুঞ্জ এলাকায় জমি ও অ্যাপার্টমেন্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়া সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে যৌথ ব্যবসায়িক লেনদেনে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল মজিদের নামও এসেছে। উভয়ের যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে উত্তরা ও পূর্বাচলের প্রাইভেট বার, শ্যামলী ও খিলক্ষেতের ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন স্থানে।
তদন্তে উঠে এসেছে, আছাদুজ্জামান, তার স্ত্রী আফরোজা জামান ও তিন সন্তান এবং ব্যবসায়িক পার্টনারদের সম্পত্তি সম্পর্কিত তথ্য গোপন করেছেন। আয়কর ফাইলে তাদের ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ ২৩ কোটি টাকা হলেও প্রকৃত সম্পত্তি ২০০ কোটি টাকার বেশি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে। বিশেষ করে আফরোজা জামানের নামে থাকা ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা এবং শেয়ারের তথ্যও আয়কর ফাইলে উল্লেখ করা হয়নি।
দুদক ছাড়াও অন্যান্য সংস্থা এই সম্পদ লেনদেন ও হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যে আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, আয়কর নথি, জমির দলিল এবং ব্যবসায়িক সংস্থার নথি পর্যালোচনা করা হয়েছে।