উচ্চ রক্তচাপের কারণে যেকোনো সময় স্ট্রোক হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া, সময়মতো চিকিৎসা না পেলে স্ট্রোক প্রাণঘাতী হতে পারে। আজ, ২৯ অক্টোবর ‘ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক ডে’-তে বিশেষজ্ঞরা তাই জোর দিচ্ছেন সচেতনতার ওপর।
চিকিৎসক দেবর্ষি জানান, স্ট্রোক মূলত দুই ধরনের—ইস্কেমিক ও হেমারেজিক।
ইস্কেমিক স্ট্রোকে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, আর হেমারেজিক স্ট্রোকে দুর্বল রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। দুই ক্ষেত্রেই দ্রুত চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি। দেরি হলে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে। উচ্চ রক্তচাপই বড় শত্রু জানিয়ে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘হাইপারটেনশন থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
প্রেশারের ওষুধ একদিনও বন্ধ করা যাবে না। গর্ভাবস্থা বা অন্য অসুস্থতার সময় রক্তচাপ বেড়ে গেলেও সতর্ক থাকতে হবে।’
সাম্প্রতিক সময়ে কম বয়সিদের মধ্যেও স্ট্রোকের ঘটনা বাড়ছে। ৪০ বছরের আগেই অনেকে এই মারাত্মক অবস্থার শিকার হচ্ছেন।
ডা. দেবর্ষির ভাষায়, ‘অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই এর মূল কারণ। যেমন—দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, শরীরচর্চার অভাব, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এগুলোই তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।’ যে অভ্যাসে বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি
উচ্চ রক্তচাপ: রক্তচাপ বেড়ে গেলে তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। পরিবারের কারো হাই ব্লাড প্রেশারের ইতিহাস থাকলে নিয়মিত প্রেশার পরীক্ষা জরুরি।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস : লবণ ও সোডিয়ামযুক্ত খাবার কম খেতে হবে।
জাঙ্ক ফুড, প্যাকেটজাত ও অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়।
অলস জীবনযাপন : নিয়মিত ব্যায়াম করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, রক্তচাপও স্বাভাবিক থাকে। সারাদিন বসে থাকা বা শুয়ে থাকার অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত।
ধূমপান ও মদ্যপান : এই দুই অভ্যাস রক্তচাপ ও রক্তনালির ক্ষতি করে। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই এগুলো থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও সক্রিয় জীবনযাপনই স্ট্রোক প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আর স্ট্রোক হলে আতঙ্কিত না হয়ে লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে একজন নিউরোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।











