গত ২৫ মে আমেরিকার মিনেসোটা রাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ প্রকাশ্যে খুন হন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে। সেই নিয়ে দেশজুড়ে নজিরবিহীন প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু করে দেশটির কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরা। বিক্ষোভ থামাতে ১৮০৭ সালে প্রণীত, প্রায় ২০০ বছরের পুরনো আইন অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশজুড়ে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিউইয়র্কসহ অন্যান্য নগরীতে প্রায় ৭৭ বছর পর কারফিউ জারি করা হয়। মানবাধিকার সচেতন শ্বেতাঙ্গ এবং অনেক অভিবাসীও বর্ণবাদবিরোধী এই আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। আন্দোলন চলমান রয়েছে এবং তা কেবল যে আমেরিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে তা নয়। বরং এই জোয়ারের ঢেউ আঘাত হানতে শুরু করেছে আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে ওপারের ব্রিটেনসহ অন্যান্য দেশেও।
সাংবিধানিকভাবে অবসান ঘটানো হলেও বাস্তবে মার্কিন সমাজ থেকে ঘৃণ্য বর্ণবাদের অবসান ঘটেনি। তার প্রমাণ দিতেই যেন গত ১২ জুন দেশটার আটলান্টা অঙ্গরাজ্যে শ্বেতাঙ্গ পুলিশেরা প্রকাশ্যে গুলি করে রেশার্ড ব্রুকস (২৭) নামের আরও এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে খুন করেছে। মূলত আমেরিকার সমাজে বর্ণবিদ্বেষের এই ঘটনাগুলো কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। শত শত বছর ধরে এটা চলে আসছে এবং তা এখনো প্রবলভাবেই বিদ্যমান। জোর দিয়েই বলা যায় তা, কারণ সাধারণভাবে নাগরিকদের সাংবিধানিক আইন মানার প্রবণতার কারণে তাদের সামাজিক আচার-আচরণে বর্ণবাদের প্রকাশটা সহজে বোঝার উপায় থাকে না। কিন্তু পুলিশ যখন আইন বলবৎ করার নামেই কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর বর্বরোচিত বাড়াবাড়ি করে তখন তাদের বিদ্বেষের মাত্রা সহজে দেখা ও বোঝা যায়। সাম্প্রতিক সময়ে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের হত্যার অন্তত কয়েক ডজন মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে যার প্রত্যেকটিই নিছক বিদ্বেষপ্রসূত বাড়াবাড়ির কারণে ঘটেছে বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। ফ্লয়েড এবং ব্রুকের আগে ট্রাইভন মার্টিন, এরিক গার্নার, মাইকেল ব্রাউন, ওয়াল্টার স্কট-এদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে পুলিশের কোনও না কোনও সদস্যের হাতে। আরও স্পষ্ট করে বললে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের আইনের ভুল প্রয়োগের কারণে। এই তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। বর্ণবাদের গভীরতাটা বোঝা যায়, যখন আমেরিকার মতো গণতান্ত্রিক বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশেও কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত শ্বেতাঙ্গের বিচারে আদালতের জুরিদের পক্ষপাতের আলামত স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের এই আন্দোলনের নাম হয়ে গেছে, ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ অর্থাৎ কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনেরও মূল্য আছে। আন্দোলনের তীব্রতার কারণে এখন সে দেশে বর্ণবাদের বীভৎসতার মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে সামাজিক-রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীর আমূল সংস্কারের নানা কার্যক্রম হাতে নেয়ার বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে এসেছে। তবে মার্কিন পুলিশের সংস্কারের চেয়েও যে বিষয়টি এই মুহূর্তে বিশ্বকে বেশি নাড়া দিচ্ছে সেটি হলো বর্ণবাদের একেবারে শেকড়ে কুঠারাঘাতের উদ্যোগ।
‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ আন্দোলনের ঢেউ যে ইউরোপেও লাগতে শুরু করেছে, তারই মাধ্যমে ওই কুড়াল চালানোর কাজটি শুরু হয়েছে। ইউরোপ ও আমেরিকা অর্থ-সম্পদে একসময় সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল আফ্রিকা থেকে গায়ের জোরে ধরে আনা কালো মানুষদের পরিশ্রমে; তাদের রক্ত ঘাম চোখের পানির দামে। আর এই কালো মানুষদের যারা ধরে এনেছিল তারা বর্তমান সুসভ্য, গণতান্ত্রিক, মানবাধিকারবাদী ইউরোপের শ্বেতাঙ্গ। মানুষকে তারা মানুষ নয়, গরু ছাগল বা কুকুর বেড়ালের মতো গণ্য করেছে। তাদের দাস বানিয়েছে। গলায়, পায়ে শিকল বেঁধে হাটে হাটে বিক্রি করেছে। তার আগে লোহা পুড়িয়ে টকটকে লাল করে সেটি দিয়ে গরু ও ঘোড়ার গায়ে যেভাবে দাগ দেয়া হয় ঠিক সেভাবেই দাগ বা চিহ্ন দিয়েছে। এরপর প্রতিদিন চাবুক দিয়ে পেটানো, খেতে না দিয়ে সারা দিন কাজ করানো এমনই সব পাশবিক আচরণ করেছে।
এই দাস ব্যবসা সবার আগে শুরু করেছিল পর্তুগিজরা। দাস ধরে আনা ও বিক্রি করার জন্য ওদের প্রথম অনুমতি দেন স্পেনের রাজা। এরপর এই ব্যবসায়ে আসে ব্রিটিশ, ফরাসি এবং ওলন্দাজরা। তারা কৃষ্ণাঙ্গদের ধরে প্রধানত ইউরোপেই নিয়ে আসত এবং এখানকার বিভিন্ন দেশে দাস হিসাবে বিক্রি করত। কিন্তু কলম্বাস আমেরিকা আবিষ্কার করার পর সেখানে তারা বিপুল, বিশাল সুবিস্তৃত ভূমি স্থানীয়দের কাছ থেকে দখল করে নেয়। এই বিরাট ভূমিতে ফসল ফলানোর মতো শ্রমিক তাদের ছিল না। এই সুযোগটিই কাজে লাগায় একশ্রেণির দাস ব্যবসায়ী। তারা আফ্রিকা থেকে কালো মানুষদের ধরে ধরে জাহাজে করে আমেরিকায় পাচার করতে থাকে। আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলোতে এখন যে কালো মানুষদের আমরা দেখতে পাই তারা সবাই ওই হতভাগা আফ্রিকান দাসদের বংশধর। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ইউরোপীয়দের ‘নতুন বিশ্ব’ অর্থাৎ আমেরিকায় তারা সব মিলিয়ে এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি কালো মানুষকে রপ্তানি করেছিল। জাহাজে খেতে না দিয়ে গরু-ছাগলের মতো গাদাগাদি করে পরিবহনের কারণে পথেই ২০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃতদেহ তারা হাঙ্গরের খাদ্য হিসেবে সাগরে ফেলে দিয়েছিল। সেই ইতিহাস মর্মান্তিক, মর্মবিদারক, বীভৎস এবং বর্ণনাতীত। অ্যালেক্স হ্যালির উপন্যাস রুটস, অ্যাঞ্জেলা ওয়াই ডেভিস-এর আর প্রিজন্স অবসোলিট, ওয়েসলি লোয়েরির দে ক্যান্ট কিল আস অল অথবা ক্লডিয়া র্যাঙ্কির সিটিজেন: অ্যান অ্যামেরিকান লিরিক ইত্যাদি বইগুলো থেকে হয়তো খানিকটা ধারণা পাওয়া যাবে।
যা হোক, আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ ফ্লয়েড হত্যার সূত্র ধরে আন্দোলনের জোয়ার ব্রিটেনেও ছড়িয়ে পড়েছে। বর্ণবাদের মূলোৎপাটনে একজোট হয়েছে মানুষ। এর প্রতীক হয়ে উঠেছে প্রায় ৩শ’ বছর আগে যেসব ব্রিটিশ নাগরিক আফ্রিকা থেকে কৃষ্ণাঙ্গদের ধরে ধরে ইউরোপ ও আমেরিকায় পাচার করেছিল সেসব নরপশুর ভাস্কর্য উচ্ছেদের কার্যক্রম। গত ৬ ও ৭ জুন ব্রিটেনের ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড এই চারটি স্টেটে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়। ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম, ব্রিস্টল, ম্যানচেস্টার, লেস্টার, শেফিল্ড, ওলভারহ্যাম্পটন ও নটিংহামে, ওয়েলসের কার্ডিফে, স্কটল্যান্ডের এডিনবরা ও গ্ল্যাসগোতে এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে হাজার হাজার মানুষ করোনাভাইরাসজনিত লকডাউনের মধ্যেই বিক্ষোভ করেছে।
এদিকে ব্রিস্টলে ১০ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী ১৭ শতকের ইংরেজ দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কলস্টনের মূর্তি ভেঙে পাশের হারবার নদীতে ফেলে দেয়। ১৬৩৬ সালে ব্রিস্টলের ধনাঢ্য পরিবারে জন্ম নেয়া কলস্টন কর্মজীবনে ছিল রয়েল আফ্রিকান কোম্পানির ডেপুটি গভর্নর। ওই কোম্পানি ১১ বছরে অন্তত ৮০ হাজার কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকানকে আমেরিকায় দাস হিসেবে পাচার করেছে বলে অভিযোগ। পাচারের সময় তিন হাজার শিশুসহ অন্তত ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। কলস্টনের মূর্তি উচ্ছেদের পর ব্রিটেনের প্রতিটি রাজ্যের বিভিন্ন শহরে স্থাপিত বিতর্কিত ক্রীতদাস ব্যবসায়ী, উপনিবেশ স্থাপনকারী, বর্ণবাদীদের মূর্তি উচ্ছেদের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের আয়োজকরা। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। শুধু একাত্মতা প্রকাশ করেই বসে থাকেননি তিনি। এজন্য একটি কমিশনও গঠন করেছেন। বিতর্কিত ক্রীতদাস ব্যবসায়ীদের মূর্তি ও নাম ফলক উচ্ছেদ এবং সড়কের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে এই কমিশন পর্যালোচনা করে রিপোর্ট দেবে। রিপোর্টের ভিত্তিতে ১৬ ও ১৭ শতকের বেশ কয়েকজন বড় দাস ব্যবসায়ীর মূর্তি ও নাম ফলক উচ্ছেদ ও তাদের নামে স্থাপন করা সড়কের নাম পাল্টানোর নির্দেশ দিয়েছেন সাদিক খান। তবে এই পর্যালোচনার ভেতরে স্যার উইন্সটন চার্চিলের মূর্তি থাকবে না। লন্ডনে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীদের রোষানলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের মূর্তি। সেটিকে এখন স্টিলের শক্ত আবরণে ঢেকে পাহারা দিচ্ছে ব্রিটিশ পুলিশ। এ ঘটনা একটি উদাহরণ। ভারতে মানব-সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী, বর্ণবাদী চার্চিল তার নিজ দেশেই মানুষের এতটা ঘৃণার মুখোমুখি হয়েছেন যে, তার নিরীহ ধাতব মূর্তিটাও নিরাপদ নয়।
এ ঘটনা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের জন্য এই বড় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রতিবাদের মুখে লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের ডকল্যান্ড মিউজিয়ামের সামনে থেকে দাস ব্যবসায়ী রবার্ট মিলিগানের মূর্তিটি মঙ্গলবার উচ্ছেদ করা হয়। মেয়র জন বিগসের নির্দেশে এবং তার উপস্থিতিতে মূর্তিটি সরিয়ে নেয়া হয়। ১৭৪৬ সালে স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী মিলিগানের মূর্তিটি ১৮১৩ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। মূর্তি অপসারণের পর মেয়র জন বিগস বলেন, ব্রিস্টলের ঘটনার পর বাসিন্দাদের উদ্বেগ এবং জননিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা মূর্তিটি দ্রুত সরানোর উদ্যোগ নিই। মেয়র আরও বলেন, বর্ণবাদী ইতিহাস ও তার প্রতীকগুলোকে আমরা কিভাবে মোকাবেলা করব তার জন্য ব্যাপকভিত্তিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডন থেকে বুধবার দাস ব্যবসায়ী স্যার জন ক্যাসের মূর্তি অপসারণ করা হয়েছে। তার জন্ম ১৬৬০ সালে এবং মৃত্যু ১৭১৮ সালে। আফ্রিকান এবং ক্যারিবিয়ান দাস ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। সারা দেশে দাস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জেগে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নেয়। এদিকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি গেটের সামনে স্থাপিত সাম্রাজ্যবাদী সেসিল রডিসের মূর্তি উচ্ছেদের জন্য অক্সফোর্ডের ২৬ জন কাউন্সিলর ও এমপি আহ্বান জানিয়েছেন। ইউনিভার্সিটির ওরিয়েল কলেজের সামনে শত শত শিক্ষার্থী দাস ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত রডিসের মূর্তি অপসারণের দাবিতে গত বুধবার বিক্ষোভ করেছেন।
ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের হোতা রবার্ট ক্লাইভের মূর্তি অপসারণের দাবিতে আবেদন জানিয়েছে পাক-ভারত- বাংলাদেশের বংশোদ্ভূত ব্রিটিশরা। অনলাইনে স্বাক্ষর সংগ্রহের মাধ্যমে ক্যাম্পেন চলছে। পশ্চিম ইংল্যান্ডের শ্রুজবেরিতে অবস্থিত ক্লাইভের মূর্তি অপসারণের দাবি জানিয়ে খোলা অনলাইন পিটিশনে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্বাক্ষরকারীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আবেদনে বলা হয়েছে, ‘ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার প্রতীক ক্লাইভের মূর্তিটি ভারতীয়, বাঙালি ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষের জন্য খুবই অবমাননাকর। ইংল্যান্ড ছাড়াও ব্রিটেনের বাকি তিন রাজ্য উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড আর ওয়েলসের বিভিন্ন শহরেও দাস ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল এমন সব ব্যক্তির মূর্তি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয়রা। উত্তর আয়ারল্যান্ডের নিউয়ারি থেকে জন মিচেলের মূর্তি অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে তারা।
মনে হবে যেন, আধুনিক শিক্ষা, বর্ণবাদী চেতনার বিলোপ, মানবিক বোধের উজ্জীবন ঘটায় ব্রিটিশরা এখন নিজেদের উদ্যোগেই বর্ণবাদের প্রতীকগুলো সরিয়ে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু, এর কোনোটিই সত্য নয়। ব্রিটেনে এখনো শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী চেতনা লালনের মতো বহু মানুষ আছে এবং তারা এরই মধ্যে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ আন্দোলনের বিরুদ্ধে মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে নোংরা ষড়যন্ত্রও শুরু করেছে। প্রসঙ্গত বলে রাখি, আফ্রিকা থেকে যে কোটি খানেক কালো মানুষকে ইউরোপীয়রা ধরে এনে দাস বানিয়েছিল তারা ধর্মীয় পরিচয়ে ছিল প্রধানত মুসলমান। আজকের বিশ্বে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সক্রিয় যে দু’টি জাতি তারা হলো ব্রিটেন ও আমেরিকা। এরা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে যেমন মদদ দিচ্ছে, তেমনি ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের। কৃষ্ণাঙ্গ আন্দোলনের ক্ষেত্রেও তাদের ভূমিকা খুব একটা আলাদা হওয়ার কারণ দেখছি না।
সূত্র: rtvonline.com/