গোপালপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের গোপালপুরে লাভলী আক্তার (১৫)। এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী তিনি।
কিন্তু হঠাৎ করেই লিঙ্গ পরিবর্তন হয়ে তিনি মেয়ে থেকে ছেলেতে পরিণত হলেন।
এমনকি নিজের নাম লাভলী আক্তার পরিবর্তন করে রেখেছেন আব্দুল্লাহ জিসান।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের নঠুরচর পশ্চিম পাড়া গ্রামে। তাকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করেছেন বিভিন্ন এলাকার উৎসুক জনতা।
শনিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হালিমুজ্জামান তালুকদার।
লাভলী আক্তার (আব্দুল্লাহ জিসান) নঠুরচর পশ্চিম পাড়া গ্রামের লাভলু মিয়ার বড় মেয়ে ও মির্জাপুর বিএল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
হালিমুজ্জামান তালুকদার জানান, প্রায় কয়েক মাস আগে লাভলী আক্তারের মধ্যে ছেলেদের মতো ভাব আসে; এসময় তার বিয়েও ঠিক হয়েছিলো। লিঙ্গ পরিবর্তনের কারণে সে বিয়েতে মত দেয়নি।
কিন্তু ওই সময়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি তার পরিবার। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) বিষয়টি জানাজানি হলে লাভলী আক্তারের বাড়িতে উৎসুক জনতার ভীড় জমে।
তাকে এক নজর দেখতে দূর দুরান্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে লোকজন আসছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রানা খান জানান, প্রতিদিন লাভলী আক্তারের (আব্দুল্লাহ জিসান) বাড়িতে কয়েক হাজার মানুষ আসে তাকে দেখতে। সবাই কৌতুহল নিয়ে তাকে দেখছে।
পরিবারের কথা –
লাভলী আক্তারের (আব্দুল্লাহ জিসান) বাবা লাভলু মিয়া বলেন, তিনি তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন।
বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর দিনরাত মানুষ ভিড় করছে তাকে দেখার জন্য। এখন তার শারীরিক গঠন পুরুষের মতো।
এছাড়া চেহারাতেও কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। মেয়ে থেকে ছেলেতে পরিণত হওয়ার পর তার নাম রাখেন আব্দুলাহ জিসান।
তিনি আরো বলেন, শনিবার দুপুরে তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। মাথার চুল কেটে দেয়া হয়েছে। পায়জামা, পাঞ্জাবি কিনে দেওয়া হয়েছে।
তার মা পারভিন আক্তার বলেন, ছয় মাস আগে লাভনী আক্তারের (আব্দুল্লাহ জিসান) বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ে করতে অসন্মতি প্রকাশ করে; সে সময় লাভলী আক্তার তার মাকে লিঙ্গ পরিবর্তনের বিষয়টি জানান।
কিন্তু তার মা ঘটনাটি বিশ্বাস করেননি। পরে তিনি সবকিছু জেনে শুনে বিশ্বাস করেন।
লাভলী আক্তার (আব্দুল্লাহ জিসান) বলেন, সাত মাস আগে থেকেই তিনি বিষয়টি বুঝছেন। প্রথমে তিনি তার চাচীকে জানান। এরপর তার বাবা মা বিষয়টি জানে।
এসএসসি পরীক্ষার পর বিষয়টি প্রকাশ করার তার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু তার আগেই প্রকাশ পেয়েছে।
ডাক্তারের কথা –
গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলিম আল রাজি জানান, ‘স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি।
আমাদের দেশে মাঝে-মধ্যেই এ ধরনের ঘটনা ঘটে। এটা সাধারণত হরমোনজনিত সমস্যার কারনে হয়ে থাকে; আমি এই বিষয়েরই ডাক্তার।
রোববার (১০ অক্টোবর) পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হবে। সেখানে টিউমার থাকতে পারে।’ সম্পাদনা – অলক কুমার