টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার খাল-বিল ও জলাশয়ে দিন দিন বেড়েই চলেছে অবৈধ ‘চায়না জাল’-এর ব্যবহার। এই ক্ষতিকর ফাঁদে দেশীয় প্রজাতির মাছ, ডিমওয়ালা মা মাছসহ নানা জলজ প্রাণি নির্বিচারে ধরা পড়ছে, যা হুমকির মুখে ফেলছে স্থানীয় মাছের প্রজাতি ও জলজ জীববৈচিত্র্যকে।
সরেজমিনে জানা গেছে, ‘চায়না জাল’ সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ও ৬০ থেকে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। লোহার রড ও রিং ব্যবহার করে তৈরি এই ঢলুক আকৃতির ফাঁদ সূক্ষ্ম জালে আবৃত থাকে, যাতে দুদিক থেকেই সহজে মাছ ঢুকে পড়ে আর আর বের হতে পারে না। আকার ও মানভেদে প্রতিটি জালের দাম দুই হাজার থেকে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
হামিদপুর বাজার, সাগরদিঘী, গারোবাজার, ধলাপাড়া, পাকুটিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন হাটে অবাধে বিক্রি হচ্ছে এই জাল। পুঁটি, ট্যাংরা, শোল, মাগুর, চিংড়ি থেকে শুরু করে বিলুপ্তপ্রায় ছোট প্রজাতির মাছ, এমনকি ব্যাঙ, শামুক, কুচিয়ার মতো জলজ প্রাণিও ধরা পড়ছে এই জালে।
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা কম দামে সহজে বেশি মাছ পাওয়ার লোভে এ জাল ব্যবহার করছেন। টোক নদী, বংশাই নদী, চাপরা বিলে ৩০-৪০ জন জেলে প্রতিনিয়ত চায়না জাল পেতে মাছ ধরছেন। এতে জলাশয়ের প্রাকৃতিক প্রজনন চক্র মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ সচেতনরা।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন বলেন, ‘চায়না জালের বিষয়ে আমরা অবগত আছি। অচিরেই উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ ধরনের অবৈধ জাল অপসারণে অভিযান চালানো হবে।’
স্থানীয়রা দ্রুত অভিযান ও কঠোর মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন, না হলে দেশীয় মাছের প্রজাতি বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কা দিন দিনই আরও প্রকট হবে।