নিজস্ব প্রতিবেদক : পায়ে সেন্ডেল, পরনে মলিন পোশাক পরা যুবক রাসেল। মুখে ক্লান্তির ছাপ থাকলেও চোখে ছিল দৃঢ় প্রত্যয়।
বাড়ি কালিহাতী উপেজলার গোহালিয়া বাড়ি। বাবা দিনমজুর। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে মেঝ।
১২০ টাকা দিয়ে অনলাইনে মাধ্যমে ফরম পূরন করে চাকরির আশায় দাঁড়িয়েছিলেন পুলিশ লাইন মাঠে।
পূর্ণাঙ্গ ফলাফল নির্বাচিত হওয়ার খবর শুনে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারিনি।
রাসেল বলেন- বাবা দিনমজুর, মা গৃহিনী। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে সে মেঝ। অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন আমাদের। পুলিশে সুযোগ পেয়েছি। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।
রাসেল আরো বলেন- আগে শুনতাম, পুলিশের চাকরি পেতে মামা-খালুর জোর ও টাকা লাগে! কিন্তু আমিতো মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পাইলাম।
অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে ঘাটাইলের প্রবাসী বাবার মেয়ে ফাতেমা খাতুন বলেন, সবারই ছোট বেলা থেকে একটা স্বপ্ন থাকে। আমার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন, আমি পুলিশ হয়ে দেশ ও দেশের মানুষের সেবা করবো।
শুধু রাসেল নয়, একই অবস্থায় ঘাটাইলের ফাতেমা খাতুন, নাগরপুরের আরিফ হোসেনের।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান হয়েও ১২০ টাকার বিনিময়ে পুলিশের চাকরি পেয়ে তারা আবেশ প্রকাশের ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।
ঘুষ ছাড়া চাকরি হওয়ায় খুশিকে আত্মহারা সদ্য নিয়োগ প্রাপ্তরা। তাদের স্বপ্ন দেশের ও দেশের মানুষের সেবা করা।
এযুগে ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় নিজ সন্তানের না হলে বিশ্বাস হতোনা। এতে খুশি অভিবাবকরাও।
পুলিশের চাকরি পেতে মামা-খালুর জোর ও টাকা লাগে! এমন ধারনাকে মিথ্যা প্রমাণ করে জনপ্রতি ১২০ টাকার বিনিময়ে টাঙ্গাইলে পুলিশের চাকরি পেলেন ১০০ জন।
ফলাফলের চুড়ান্ত কপি হাতে পেলেও নিজের চোখকেও যেন বিশ্বাস করতে পারেনি সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই তরুনেরা।
আর চাকরি পাওয়ায় খুশি পরিবার। পুলিশের চাকরিতে ঘুষ লাগে না জানিয়ে সকলকে সাবধান হওয়ার পরামর্শ পুলিশ সুপারের।
পুলিশ সুপারের বক্তব্য –
নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, এ নিয়োগে যোগ্য ও মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হয়েছে।
এখন আর পুলিশের চাকরিতে ঘুষ লাগেনা জানিয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার অনুরোধ তার।
তিনি আরো বলেন, এ বছর টাঙ্গাইল জেলায় ৮৭ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারীকে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার তাদের টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল টেস্ট করে পরবর্তীতে ঢাকা রাজারবাগ পুলিশ লাইনে চুড়ান্ত মেডিকেল টেস্ট করিয়ে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার