বগুড়ার আদমদীঘিতে পূর্বশত্রুতার জেরে এক আদম ব্যবসায়ীকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে ‘মোবাইল চোর’ বলে অভিযুক্ত করে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী মতিউর রহমান (পিতা: হাবিবুর রহমান), নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মাছ ব্যবসার পাশাপাশি বৈধভাবে বিদেশে জনশক্তি পাঠানোর কাজ করেন এবং ইতোমধ্যে তিন-চারজনকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। সম্প্রতি আদমদীঘির তালশন গ্রামের সজিব হোসেনকে সৌদি আরব পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন, যার জন্য সাড়ে চার লাখ টাকা নেন। তবে সৌদিতে পৌঁছার পর বৈধ কাগজপত্র পেতে বিলম্ব হওয়ায় সজিব ক্ষুব্ধ হন এবং হুমকি দেন।
মতিউরের অভিযোগ, গত রবিবার (১৮ মে) দুপুরে তিনি বগুড়ার মাটিডালি থেকে মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার সময় সান্তাহারগামী দোলনচাঁপা কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনের একই বগিতে থাকা সজিবের ভাই রাকিব ও ডহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনের নেতৃত্বে মুখোশ পরা ৬-৭ জন তার গতিবিধি নজরদারি করে। ট্রেনটি নসরতপুর স্টেশন এলাকায় পৌঁছালে তারা মতিউরকে ‘মোবাইল চোর’ বলে অপবাদ দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে এবং ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে।
তিনি প্রায় ৪-৫ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে থাকেন এবং একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে ট্রেন নসরতপুর স্টেশনে পৌঁছালে প্ল্যাটফর্মে ধাক্কা খেয়ে তিনি নিচে পড়ে যান। এ সময় উপস্থিত লোকজন চোর ভেবে তাকেও মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় মতিউরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
পরে গতকাল সোমবার (১৯ মে) রাতে ভুক্তভোগী নিজেই সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। মামলায় ডহরপুর গ্রামের সুমনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
সান্তাহার রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “নসরতপুর রেলস্টেশনে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা চলছে।”