নাগরপুর প্রতিনিধি : সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ছয়জনকে অবশেষে দাহ না করে দাফন বা মাটি চাপা দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
যদিও সনাতন ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় রীতি অনুসারে মৃত্যুর পর তাদের দেহ দাহ করা হয়।
কিন্তু টাকার অভাবে মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ছয় সদস্যকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (০৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাদ্রা গ্রামের নিহতদের নিজ বাড়ির আঙিনায় মাটি চাপা দেওয়া হয়।
নিহতরা হলেন, হরেকৃষ্ণ বাদ্যকার (৫৫), তার ছেলে গোবিন্দ বাদ্যকার (২৮), গোবিন্দর স্ত্রী ববিতা বাদ্যকার (২৫), মেয়ে রাধে বাদ্যকার (৪), চাচী খুশি বাদ্যকার (৫২) ও চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকার (৩০)।
ইউপি সদস্য মো. বেল্লাল সর্দার জানান, নিহতের পরিবারে হরেকৃষ্ণ বাদ্যকারের স্ত্রী ঝর্না ও নিহত দু’ভাইয়ের স্ত্রী ছাড়া কেউ বেঁচে নেই।
তারা খুবই দরিদ্র ও অসহায়। একসঙ্গে ছয়জনের মরদেহ দাহ করতে ৭০-৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
এতো টাকা ওই পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই সবার সিদ্ধান্তে মরদেহগুলো সকালে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
তবে নিহতের স্বজনরা যদি দাহ করার দাবি জানাতেন তাহলে আমাদের সহযোগিতায় মরদেহগুলো দাহ করা হতো।
এদিকে, শনিবার সকালে মরদেহগুলো মাটিচাপা দেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিহতদের বাড়ি পরিদর্শন করে আর্থিক সহযোগিতা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর প্রমুখ।
মরদেহগুলো মাটিচাপা দেওয়ার বিষয়ে নাগরপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিন মসরুর জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের বাড়িতে গিয়ে হরে কৃষ্ণের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা, চাচাতো ভাই রাম প্রসাদ বাদ্যকারের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া শনিবার সকালে অপর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সিএনজি চালক জামাল শেখের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
তবে একই পরিবারের ছয়জনকে মাটি চাপার বিষয়টি আসলে টাকার অভাবে দেওয়া হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না।
আর এ বিষয়ে তাকে কেউ অবগত করেননি।
যদি নিহতের স্বজনরা কেউ তাকে অবগত করতেন, তাহলে অবশ্যই প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হতো।