টাঙ্গাইলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাংবাদিকদের জড়িয়ে মামলা করেছে কামরুল হাসান নামের এক বিএনপি নেতা। কামরুল হাসান উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে ও অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডামি নির্বাচনের আয়োজন এবং ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলে শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ আসনের এমপি ছোট মনির, দেশ টেলিভিশনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ, ডিবিসির স্টাফ রিপোর্টার সোহেল তালুকদারসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) দুপুরে টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভূঞাপুর থানা আমলী আদালতে বিএনপি নেতা কামরুল হাসান মামলাটি দায়ের করেন। পরে ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের তালিকায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসার, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের নাম রয়েছে।
মামলার বিবরণী –
বাদি মামলায় উল্লেখ করেন, ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের সাথে যোগসাজশ করে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেন। বাদি কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্য ভোটারদের সাথে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাকে মারপিট করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।
নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোট কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সীল মেরে বাক্স ভর্তি করে। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
আইনজীবীর বক্তব্য –
বাদি পক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেই সাথে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।