নিজস্ব প্রতিবেদক : মহালয়ার মধ্যদিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় ষষ্ঠী পূজায় দেবীর বোধনের মাধ্যমে।
প্রতি বছরের মতো এবারও সারা বিশ্বের সাথে টাঙ্গাইলের সনাতন ধর্মালম্বীরা শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করছেন।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
শিল্পীর নিপুণ হাতে তৈরি দেবী দুর্গা শিল্পীদের মায়ার বাঁধন। শিল্পীর তুলির শেষ আঁচরে দেবী দুর্গা নিজ অবয়বে রূপ পেয়েছেন।
এরই মধ্যে নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দুর্গার প্রতিমা প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছ।
টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় এক হাজার ২৮৪টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২১৫টি মন্ডপে, মির্জাপুরে ২৪৩টি, বাসাইলে ৬৫টি, নাগরপুরে ১৩৩টি, দেলদুয়ারে ১৩০টি, গোপালপুরে ৫৬টি, ভূঞাপুরে ৪১টি, কালিহাতীতে ১৯২টি, ঘাটাইলে ৮১টি, সখীপুরে ৩৭টি, মধুপুরে ৫৪টি ও ধনবাড়ীতে ৩৭টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত বছর পূজা মন্ডপের সংখ্যা ছিল এক হাজার ২৬৭টি ও চলতি বছর ১২৮৪টি। গত বছরের তুলনায় এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা ১৭টি বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৮টি ওয়ার্ডসহ জেলার প্রতিটি মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ।
মাটির কাজ শেষ করেছেন এখন রং তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। আবার কেউ রং মিশে দিচ্ছেন।
তাদের যেনো দম ফেলার ফুসরত নেই। রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
সদর উপজেলার তারটিয়া পাল পাড়া এলাকার প্রতিমা শিল্পী পরিমল পাল জানান, তিনি এবছর পাঁচটি প্রতিমা করেছেন।
এরমধ্যে টাঙ্গাইলে ৩টি, ঢাকায় ১টি ও বরিশালে ১টি মন্ডপ রয়েছে।
গত একমাস রঙ-তুলি নিয়ে ব্যাপক ব্যস্ত সময় পাড় করতে হয়েছে। প্রতিমাগুলো তৈরি করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
প্রতিমা শিল্পী সুজয় পাল, সনাতন পাল, গেন্দা পাল, মাধব পাল সহ অনেকেই জানান, গত একমাস রাতদিন পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ কলেছেন।
তাদের কাছে এই কাজ বংশ পরম্পরায় এসেছে। তাদের দাদা করেছে, বাবা করেছে, এখন তারা করছেন।
এবছর প্রচুর দাম দিয়ে রঙ কিনতে হয়েছে। রঙের দাম আর পারিশ্রমিক; কোন ভাবেই সামস্যপূর্ণ না।
পূজা উদযাপন পরিষদ ও পুলিশের বক্তব্য –
টাঙ্গাইল জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার গুণ ঝন্টু জানান, এ বছর জেলার ১২টি উপজেলার এক হাজার ২৮৪ টি পূজামন্ডপে ৫০০ কেজি করে জিআর চাল দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন, রাজনীতিকদের সাথে তাদের একাধিক আলোচনা সভা হয়েছে।
প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহাযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্য বছরের ন্যায় এবারও টাঙ্গাইলে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, পূজার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া মোবাইল টিম ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবে।