নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বেকড়া ইউনিয়নের বেকরা গ্রামের প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে চালা বা পাড় না রেখে পুকুর কেটেছে।
এতে হুমকির মুখে পড়েছে এলজিইডির সরকারী রাস্তা ও পার্শ্ববর্তী ঘরবাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বেকড়া গ্রামের মৃত লেবু মিয়ার ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম দীর্ঘ কয়েক বছর দেশের বাইরে ছিলেন।
কয়েক বছর পূর্বে একই এলাকার মৃত আছর উদ্দিনের ছেলে প্রভাবশালী প্রতিবেশী সালাম মিয়া, মৃত বাকেস মিয়ার ছেলে মাসুদ মিয়া, মৃত লুৎফর মিয়ার ছেলে মো. উজ্জল মিয়া ও মৃত আবুল মিয়ার ছেলে এসরাত মিয়া তাদের প্রতিবেশী শফিকুল ও তার চাচাতো ভাইয়ের বসত বাড়ীর সীমানা ঘেঁষে অবৈধভাবে পুকুর কাটে করে।
নিয়ম না মেনে পুকুরের পাড় বা চালা না রেখে গভীর পুকুর খনন করা হয়।
এতে প্রতিবেশী শফিকুল ও তার চাচাতো ভাইয়ের বসত বাড়ীর প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ জায়গা ভেঙে পুকুরে চলে যায়।
সেই সাথে শফিকুল ও তার চাচাতো ভাইয়ের টিনের ঘরের ডোয়া, মেঝে’সহ পাকা টয়লেট ভেঙে যায়।
বেশ কয়েকটি বাঁশের ঠিকা দিয়ে ও জিআই তার দিয়ে ঘরটি কোনরকমে টেনে বেঁধে রাখা হয়েছে।
যেকোনো সময় ঘরগুলো ও পাকা টয়লেট পুকুরে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম বেকড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত হোসেন এর সহযোগিতা চায়।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য চেয়ারম্যান এবছর ২৩ আগস্ট একটি সালিশ বৈঠকের আয়োজন করে।
বিবাদী পক্ষ সালাম মিয়া বিষয়টি মীমাংসার লক্ষ্যে চেয়ারম্যানের কাছ থেকে নতুন তারিখের আবেদন করে সময় নেয়।
এরমধ্যে কৌশলে চেয়ারম্যানকে না জানিয়ে টাঙ্গাইল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হয়রানিমূলক একটি মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিয়ে কি বলছেন সংশ্লিষ্টরা :
এ বিষয়ে বেকড়া ইউনিয়ন ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেকান্দার মিয়া বলেন, ইতিপূর্বে বাঁশের খুটি দিয়ে বসতবাড়ির সাথে পুকুরের সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে আসা হয়েছে।
সেই সাথে পুকুরের মালিক সালাম মিয়াকে তার সীমানার মধ্যে পুকুরের পাড় বাঁধাই করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি তা করেননি।
এ বিষয়ে বেকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত হোসেন বলেন, সালাম মিয়াকে বিষয়টি মীমাংসার লক্ষ্যে নোটিশ করা হলে তারা সময় নিয়ে পরিষদে আসার পূর্বেই কৌশলে আদালতে নাকি একটি পিটিশন মামলা করেছে শুনলাম।
সালাম মিয়া ও তার সহযোগীরা ইতিপূর্বে পুকুরটি অপরিকল্পিতভাবে এলজিইডি রাস্তা ঘেঁষে গভীরতর করায়, সরকারি রাস্তার একটি অংশ পুকুরে ভেঙে পড়েছিল।
আমি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ৮৭ হাজার টাকা খরচ করে পুকুরের ভেঙে যাওয়া রাস্তার অংশ বেঁধে দিয়েছিলাম।
সম্প্রতি এলজিইডির সরকারী রাস্তার পুকুরের অংশে আবার ভাঙ্গন ও ফাটল দেখা দিয়েছে। সালাম মিয়া ও তার সহযোগীরা প্রভাবশালী হওয়ায়, তারা এলাকায় কারো কথা শুনে না।
এমনকি কারো সালিস মীমাংসাও মানেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাম মিয়ার বলেন, আমার জায়গায় আমি পুকুর খনন করেছি। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই।
ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বেও পোষ্ট অফিসের পিয়ন ছাত্তার মিয়াকে দিয়ে ভূয়া আপোষনামার দলিল তৈরী করে আমাদের হয়রানী করা হয়েছে।
সালাম মিয়াও তার সাথের লোকজন আমার পরিবারকে প্রতিনিয়ত মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
এ কারনে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছি।
এ বিষয়ে নাগরপুর এলজিইডি’র উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই।
ভূক্তভোগী বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউই বিষয়টি আমাকে অবগত করেন নাই। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।