নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রবাসীর স্ত্রী ও তার শ্বাশুড়িকে হত্যার পর নিজেই আত্মহত্যার করেন পরকীয়া প্রেমিক শাহজালাল।
প্রবাসীর স্ত্রীর লাশের পাশেই পড়েছিল শাহজালালের নিথর দেহ। এ ঘটনায় প্রবাসীর ভাইয়ের স্ত্রী শাহনাজ বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইলের নবাগত পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার নিশ্চিত করেছেন।
এ দিকে ট্রিপল মার্ডারের বিষয়টি নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দিন শেষে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হন।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার দিঘর ইউনিয়নের কাশতলার খামারপাড়া এলাকার প্রবাসী জয়নুদ্দিনের বসতঘরে তাদের লাশ পাওয়া যায়।
নিহতরা হলেন ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী জয়নুদ্দিনের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৫), জয়নুদ্দিনের মা জমেলা বেগম (৫৫) ও শাহজালাল ইসলাম সোহাগ (৩০)।
শাহজালাল কালিহাতী উপজেলার সাতুটিয়া পূর্বপাড়া এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে। এঘটনায় গুরুতর আহত জয়নুদ্দিনের ছেলে শাফি (৩) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ঘাটাইল থানার অফিসার ইনচার্জের বক্তব্য –
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকালে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করা হয়।
রোববার বিকালে ময়না তদন্ত শেষে তাদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ সুপারের বক্তব্য –
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ‘ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় আমরা রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি।
সাবেক স্ত্রী সুমি আক্তার ও তার শ্বাশুড়ী জমেলা বেগমকে হত্যার পর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করেছে।
এঘটনায় প্রবাসীর ভাবি বাদি হয়ে ঘাটাইল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।’
তিনি আরও জানান, ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে সুমি ও শাহজালাল পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে; প্রায় ৫ মাস তারা ঘর সংসার করে।
এরপর সুমির বাবা জিন্নত আলী তাদের দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে সুমিকে বাড়িতে রেখে দেয়। ওই সময় সুমি অন্তঃস্বত্তা ছিল।
পরে তার গর্ভে থাকা সন্তান নষ্ট করার শর্তে সুমির আগের স্বামী জয়নুদ্দিন বিদেশ থেকে দেশে ফিরে সুমিকে আবার তার কাছে ফেরত নেন।
এর কিছুদিন পর জয়নুদ্দিন আবার বিদেশে চলে যায়। সন্তান নষ্ট করায় সুমির সাবেক স্বামী শাহজালাল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।’
পুলিশ সুপার আরও জানান, ‘সুমির স্বামী জয়নুদ্দিন বাড়িতে না থাকায় মাঝে মধ্যেই শাহজালাল সুমির শ্বাশুড় বাড়িতে আসতো।
ঘরের বারান্দার লোহার গ্রিলের চাবিও থাকতো শাহজালালের কাছে। পরে গতরাতে শাহজালাল সুমির ঘরে প্রবেশ করে।
একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে তার সাবেক স্ত্রী সুমি ও সুমির শ্বাশুড়িকে হত্যা করে। এসময় সুমির শিশু সন্তানকেও হত্যার চেষ্টা করে।
এরপর শাহজালাল নিজেই আত্মহত্যা করে। বিভিন্ন আলামত ঘেটে আমরা বিষয়টির রহস্য উৎঘাটন করতে পেরেছি; তারপরও ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’ সম্পাদনা – অলক কুমার