জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভালোবাসি জামালপুর’। ২৯ জুলাই উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের পানিবন্দি মানুষের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, উপজেলার চর নন্দনের পাড়া, পূর্ব বামনা, গুঠাইল, শিংভাংগা, বীর চন্দনের পাড়া গ্রামে একটি পরিবারের একসপ্তাহ চলার মতো চাল, ডাল, তেল, আলু, চিড়া, লবণ, সাবান ও ওরস্যালাইন দেওয়া হয়। সংগঠনের পক্ষে বিভিন্ন ব্যক্তির অনুদান থেকে ৩শ মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেবে ভালোবাসি জামালপুর। প্রথম দফায় ইসলামপুরে ১৫০ জন বন্যাদুর্গতকে এ সহায়তা তুলে দেওয়া হলো।সংগঠনটি জানায়, চিনাডুলী ইউনিয়ন উপজেলার অন্য এলাকা থেকে একেবারে বিছিন্ন। মূল ভূখণ্ড থেকে যমুনার চরটিতে নৌযানে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় একঘণ্টা। এলাকার মাঠ ও ঘরবাড়িতে বুক সমান পানি। গবাদিপশু আর আশ্রয়হীন মানুষগুলো উঁচু কোনো জায়গায় কষ্টে দিন পার করছে। অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে–অনাহারে। ইউনিয়নের অন্য গ্রামে কিছু ত্রাণ পৌঁছলেও চর নন্দনের পাড়া গ্রামে আগে পৌঁছায়নি। এ গ্রামের মানুষের জন্যই ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ তৎপরতা।
ত্রাণ পেয়ে পূর্ব বামনা গ্রামের জোবেদা বেগম (৫০) আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আইজ পেটভরি কয়ডা ভাত খাইতে পারমু।’ তিনি একমাসের বেশি সময় ধরে পানিবন্দি। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। জনপ্রতিনিধিদের কাছে চেয়েও ত্রাণ সহায়তা পাননি। ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ পাওয়ায় কয়েকদিন খাবার নিয়ে ভাবতে হবে না তাকে।
চর নন্দনের পাড়ার দিনমজুর শামসু আলী (৩৮) বলেন, ‘দিন আনি দিন খাই। বানের পানি আসার পর এলাকায় কোনো কাজ নাই, কেউ ত্রাণও দেয় নাই।’
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সজীব মিয়া বলেন, ‘ত্রাণের আরেক অংশ দেওয়ানগঞ্জের দুর্গত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। আমাদের এ উদ্যোগে ক্যাডেট কলেজ ইনটেক ২০১০ ব্যাচ, ইউটিউবার ইয়েলো পটেটো ও কিটো ভাই এবং মাস্তুল ফাউন্ডেশনসহ ব্যক্তিগতভাবে যারা সহায়তা করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
উল্লেখ্য, জেলার তরুণদের সংগঠন ‘ভালোবাসি জামালপুর’। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণাসহ নানা সামাজিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সংগঠনটি। ইতোমধ্যে জাতীয়ভাবেও কাজের স্বীকৃতি পেয়েছে। এর মধ্যে ইয়াং বাংলার ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ অন্যতম।
সূত্র: jagonews24.com/feature