বাংলাদেশে একটি পরিবারের মাসিক মোট আয়ের ৫৫ শতাংশ শুধু খাবারের পেছনেই খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)। এ ছাড়া গত তিন বছরে দেশে দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও এলজিইডি মিলনায়তনে আয়োজিত “ইকোনমিক ডায়নামিক অ্যান্ড মুড অ্যাট হাউসহোল্ড লেভেল ইন মিড ২০২৫” শীর্ষক গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
তিনি জানান, বর্তমানে একটি পরিবার মাসে গড়ে ১০,৬১৪ টাকা খাবারে, ১,৮২২ টাকা শিক্ষায়, ১,৫৫৬ টাকা চিকিৎসায়, ১,৪৭৮ টাকা যাতায়াতে এবং ১,০৮৯ টাকা আবাসনে খরচ করে থাকে।
গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
২০২২ সালে অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ৫.৬%, যা ২০২৫ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.৩৫%।
বর্তমানে ১৮% পরিবার নাজুক অবস্থায় রয়েছে, যারা যেকোনো সময় দরিদ্র হয়ে যেতে পারে।
শহরের গড় আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৪০,৫৭৮ টাকা, কিন্তু খরচ বেড়ে ৪৪,৯৬১ টাকা হয়েছে।
গ্রামের গড় আয় কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯,২০৫ টাকা, ব্যয় হচ্ছে ২৭,১৬২ টাকা।
জাতীয়ভাবে মাসিক গড় আয় ৩২,৬৮৫ টাকা, ব্যয় প্রায় সমান ৩২,৬১৫ টাকা — অর্থাৎ সঞ্চয় নেই বললেই চলে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বর্তমানে তিনটি বড় সংকটের প্রভাবে আছে — কোভিড-১৯, মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।
ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে পাঁচটি নতুন ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে:
১️⃣ দীর্ঘস্থায়ী রোগের বাড়তি বোঝা
২️⃣ নারীপ্রধান পরিবারের দারিদ্র্য
৩️⃣ ঋণের বাড়তি চাপ
৪️⃣ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা
৫️⃣ নিরাপদ স্যানিটেশন সংকট
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে এখন কর্মসংস্থানের জরুরি সংকট তৈরি হয়েছে। বেকারত্ব দূর করতে এখনই বড় উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।