টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ৭নং সহদেবপুর ইউনিয়নের মোখলেছুর রহমান খান ফরিদ চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাতা এবং সহায়তা দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। মোখলেছুর রহমান খান ফরিদ চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ ইতিপূর্বে মুখ না খুললেও গত কয়েক দিন এলাকায় সাংবাদিক আসছে এমন খবরে ভূক্তভোগীরা জড়ো হয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বিভিন্ন ভোগান্তির কথা বলেন।
জানা যায়, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে ক্ষেত্র বিশেষ ২ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন ইউপি সদস্যরা। ইউপি সদস্যদের আদায়কৃত টাকাও আবার নির্ধারণ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যন নিজেই। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও ওই ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক গরীব, অসহায় লোক তাদের কাঙ্খিত সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে অধিকাংশ অভিযোগই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
ভূক্তভোগীদের বক্তব্য –
গর্ভকালীন ভাতার নামে আকুয়া গ্রামের জুয়েল রানার স্ত্রী রিমি আক্তরের কাছে টাকা চাওয়া হয়। পরে সেই টাকা না পাওয়ায় এক বছর হয়ে গেছে কিন্তু এখনো চেয়ারম্যান নাম তুলেননি ভাতার সিরিয়ালে। রিমি আক্তার বলেন,আমি চেয়ারম্যানের কাছে গর্ভবতী ভাতার জন্য আবেদন করি। এরপর সে নানা ভাবে টালবাহা শুরু করলে জেলা মহিলা সংস্থার প্রধান আপার সাথে যোগাযোগ করি। তারপর উনি চেয়ারম্যানকেও বলে দেয় যাতে করে আমাকে সরকারের এই সুবিধা দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান তার স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে আমার স্বামীর কাছে টাকা দাবী করে। আমার স্বামী টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমার ভাতার কার্ড হয়নি। এক বছর হয়ে গেলো এখনো খবর নেই। সে সহদেবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ায় তার উপরে কেউ কথা বলতে পারতো না। এখন আওয়ামী লীগ সরকার নেই, তবু তার ক্ষমতার দাপট এক বিন্দু কমেনি।
বেশ কিছু ইউপি সদস্য বলেন, ভূক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে এ অভিযোগ সঠিক, তবে এই টাকা আমি ধরি নাই। সব টাকা চেয়ারম্যানকে দিতে হয়। চেয়ারম্যান এখন টাকা ছাড়া কাজ না করলে আমরা কি করবো।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান যা বলেন –
সহদেবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান খান ফরিদ বলেন, কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাতার কার্ড দেওয়া হয় নাই। এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য –
কালিহাতি উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম (অতিরিক্ত দায়িত্বে) বলেন, বিগত দিনে এই ধরনের কাজ হতে পারে। বর্তমান সময়ে সমাজসেবা অফিসের আমরা সবাই মাঠ পর্যায়ে যাছাই-বাছাই করে নাম চুড়ান্ত করা হচ্ছে। কোন প্রকার অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল ইসলাম বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পায়নি। যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে খুব দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে বিগত সময়ে কি হয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। বর্তমান সময়ে কোন অসংগতি থাকলে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।