ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে দেশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

খবরবাংলা ডেস্ক : কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সারাদেশের নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই নদী বিপদসীমার ১৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিভাগটির আরও চার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে পানিউন্নয়ন বোর্ড।

ফলে নদী সংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা, জামালপুর জেলার কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আরো পড়ুন – ঘাটাইল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গ্রেপ্তার

এছাড়া রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম বিভাগসহ ঢাকা জেলার নদীগুলোর পানি বাড়লেও তা বিপদসীমা অতিক্রম করবেনা বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ বিভাগের ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

ভুগাই নদী শেরপুর জেলার নাকুয়াগাঁও পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়, ভুগাই-কংস, সোমেশ্বরী ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

শেরপুরের ভুগাই নদীর ভাটিতে নেত্রকোণার কংস নদী এবং জামালপুরের জিঞ্জিরাম নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

এর ফলে ভুগাই-কংস নদী সংলগ্ন শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা এবং জিঞ্জিরাম নদী সংলগ্ন জামালপুর জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

পরবর্তী দুই দিনে নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থার তথ্য –

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও উজানে ভারী বৃষ্টির প্রবণতা আছে; যার পরিপ্রেক্ষিতে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

পরবর্তী ২ দিনে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি কমতে পারে। সিলেট বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদী-সারিগোয়াইন, যাদুকাটা ও মনু নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অপরদিকে খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের এই সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীগুলোর পানি কমতে পারে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে সাঙ্গু, মুহুরী, হালদা, ফেনী ও মাতামুহুরী নদীর পানি কমছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আরো পড়ুন – আমি নির্লোভ মানুষ। আমার ৫ কোটি হলেই চলবে

ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের এই সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।

তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী ২ দিনে নদীগুলোর পানি কমতে পারে।

এছাড়া রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

পরবর্তী ২ দিন পর্যন্ত নদীগুলোর পানি কমতে পারে।

এ বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদের ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী ৫ দিন পর্যন্ত নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবস্থা –

রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর ও তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং পরবর্তী ৪ দিন গঙ্গা-পদ্মা উভয় নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে; তবে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে ঢাকা জেলা এবং এর চারপাশের প্রধান নদী— বুড়িগঙ্গা, টঙ্গী খাল, তুরাগ ও বালু নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে।

ভারী বৃষ্টির কারণে আগামী ৫ দিন পর্যন্ত ঢাকা জেলা এবং এর চারপাশের নদীর পানি ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।