ভূঞাপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে কিশোরগ্যাংয়ের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
একাধিক ভূক্তভোগী বলেছেন, কোন একজন জনপ্রতিনিধি অপর এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় কিশোরগ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয়।
ভূঞাপুরের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন – কে সে? কার নেতৃত্বে চলছে এই কিশোরগ্যাং?
এলাকায় এতো এতো ঘটনা ঘটনোর পরও তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না কেন?
কারা এই কিশোরগ্যাং তৈরি করছে, লালন-পালন করছে?
আরো পড়ুন – ভূঞাপুরে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে কিশোর গ্যাং, বাড়ছে আতঙ্ক
সাধারণ মানুষের উপর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে কিশোরগ্যাং ব্যবহার করছে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা।
তারা কি প্রশাসনের চাইতেও বড়, প্রশাসনের চাইতেও শক্তিশালী? এ ধরণের বিভিন্ন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে।
সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে তারা বা তাদের পরিবারের সদস্য ছেলে বা মেয়ে আক্রান্ত হয় এই কিশোর গ্যাং সদস্যদের দ্বারা।
কি ঘটেছিলো ভূঞাপুরে?
জেলার ভূঞাপুরে এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে এক প্রবাসীর সাথে। কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যদের হামলায় ওই প্রবাসী গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
এসময় তার কাছে থাকা টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা।
পরে ওই প্রবাসী দৌড়ে একটি বাড়িতে আশ্রয় নিলে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা।
আহত বাহরাইন প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার ভূঞাপুর পৌরসভার ঘাটান্দি গ্রামের আবুল হোসেন তালুকদারের ছেলে।
তিনি সম্প্রতি বাহরাইন থেকে দেশে এসেছেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরপাড়ে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় পুকুরপাড়ের আশপাশে অনেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
এতে ওই এলাকায় গ্রুপ ভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
প্রতিনিয়ত দলের সদস্যরা রাস্তা আটকিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে নেয়। ওই এলাকায় প্রায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, হামলার শিকার জাহাঙ্গীর তার ভাতিজাকে নিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছিল।
এসময় পুকুরপাড়ে অবস্থিত স্যার শাহরিয়ার মার্কেটের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের রাস্তা থেকে মোটরসাইকেল সরাতে বলে জাহাঙ্গীর।
আরো পড়ুন – বাসাইলে কিশোরগ্যাংয়ের হামলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী আহত
এই নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তার উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
পরে সে প্রাণরক্ষার্থে দৌড়ে একটি বাসায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালায় তারা।
এসময় প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায় গ্যাংয়ের সদস্যরা।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এরআগেও ওই এলাকায় এক যুবলীগ নেতার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
হামলার শিকার প্রবাসীর বক্তব্য –
হামলার শিকার আহত জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, মাদরাসা থেকে ভাতিজাকে নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম।
এসময় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের মোটরসাইকেলগুলো রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে রাখতে বলি।
এতে তারা চড়াও হয়ে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে ১০ জন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে।
এসময় আমার কাছে থাকা ৯০ হাজার টাকা ছিনতাই করার চেষ্টা করে। পরে প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে একটি বাসায় আশ্রয় নিই। সেখানেও হামলার করে।
পরে লোকজন এগিয়ে আসলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এসময় তিনি আরো বলেন, ওই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা একজন জনপ্রতিনিধির গ্রুপের সদস্য। স্থানীয়রাও তাদের নামপরিচয় বলতে সাহস পায় না।
পুলিশের বক্তব্য –
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান উল্ল্যাহ বলেন, ঘটনাটি শোনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।