খবরবাংলা : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গভীর রাতে ফিল্মি কায়দায় বিদ্যালয়ে ঢুকে প্রশ্ন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রী।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাত একটার দিকে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।
আটক উর্মি ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং উপজেলার বামনহাটা গ্রামের ইমরান হোসেনের মেয়ে।
পরে উর্মির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহীম, শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ও মহিউদ্দিন ওরফে মনিরসহ উর্মির মা বিদ্যালয়ে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে যায়।
জানা গেছে, ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী উর্মি তার বান্ধবী ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাসিনসহ আরো দুই ছেলে বন্ধুর সহায়তায় এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরি করার জন্য শনিবার দিবাগত রাত একটার দিকে ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।
পরে আগের থেকে বানানো তালার চাবি দিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে একেক করে কয়েকটি আলমারির তালা ভাঙতে থাকে।
এসময় পাশের রুমে থাকা নাইট গার্ড ফজলু তালা ভাঙার শব্দ শুনে ভিতরে গিয়ে উর্মির হাতে ছুড়ি দেখে।
এসময় উর্মি ওই নাইটগার্ডকে ফাঁসানোর ভয় দেখায়।
পরে একপর্যায়ে উর্মিকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাসে নাইটগার্ড বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের বাসায় নিয়ে গেলে সেখানে উর্মি ঘটনার বিস্তারিত বলে।
পরে মানবিক বিবেচনায় ওই রাতেই প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থী উর্মির মা এবং ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনকে বিষয়টি জানালে তারা বিদ্যালয়ে এসে মেয়েকে নিয়ে যায়।
এদিকে উর্মি তার বান্ধবী তাসিনসহ এই কাজে জড়িত চারজন স্থানীয় অলি রিড এন্ড লার্ন একাডেমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং করতো।
প্রধান শিক্ষক, শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য :
ভূঞাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লাল মাহমুদ বলেন, অন্য বিদ্যালয়ের ছাত্রী উর্মি তার ভাষ্যমতে প্রশ্নপত্র চুরি করে বিক্রির জন্য ছেলেদের পোশাক পড়ে গভীর রাতে বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।
তবে পূর্বেই ফিল্মি স্টাইলে বিদ্যালয়ের তালা-চাবির ছবি তুলে তালা খোলার জন্য আলাদা চাবি বানিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে সে।
পরে কক্ষের ভিতরে কয়েকটির আলমারির তালা নষ্ট করে। পরে নাইট গার্ড শব্দ পেয়ে ভিতরে গিয়ে তাকে ছুরিসহ হাতেনাতে আটক করে।
সে আমাদের জানিয়েছে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্ন চুরি করে বন্ধুদের কাছে বিক্রি করবে।
পরে মানবিক কারণে উর্মির স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তার মাকে জানানো হলে তারা বিদ্যালয়ের এসে মেয়েকে নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এই কাজে জড়িত থাকার দায়ে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসিনকে বিদ্যালয় থেকে ট্রান্সফার সার্টিফেট (টিসি) দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মহীউদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান জানান, বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রশ্ন চুরির ঘটনা জানিনা। জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, ঘটনাটি জেনেছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার