সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা চলছে। আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মহাঅষ্টমী, যা পূজার অন্যতম বিশেষ দিন। এদিন দেবীদুর্গাকে অগ্নি, বায়ু, বস্ত্র, পুষ্প ও মাল্য—এই পাঁচ নৈবেদ্যে পূজা করা হয়। সনাতনী নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ও প্রবীণ ভক্তরা নির্জলা উপবাস থেকে দেবীর চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী সন্ধিপূজা।
মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ হলো ‘কুমারী পূজা’। এ পূজায় কুমারী বালিকার মধ্যে বিশুদ্ধ নারীর রূপ কল্পনা করে তাকে দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়।
রাজধানীর রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠে প্রতিবছরের মতো এবারও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে হাজারো ভক্তদের অংশগ্রহণে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কুমারী পূজা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং শেষ হবে দুপুর ১টায়। এর আগে মহাঅষ্টমী পূজা শুরু হয়েছে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে, পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হবে সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এবং মধ্যাহ্ন প্রসাদ পরিবেশন হবে দুপুর ১২টায়। সন্ধিপূজা অনুষ্ঠিত হবে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে, সমাপ্ত হবে সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিটে।
ধর্মীয় গ্রন্থ অনুযায়ী, কুমারী পূজার সূত্রপাত হয় কোলাসুর নামে এক অসুরকে বধের মধ্য দিয়ে। দেবী মানবকন্যারূপে জন্ম নিয়ে কুমারী অবস্থায় তাকে বধ করেন। সেই থেকে দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে কুমারী পূজা পালিত হয়ে আসছে।
পুরোহিতদর্পণসহ বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ আছে, কুমারী পূজায় জাতি, ধর্ম বা বর্ণভেদ নেই। তবে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী সাধারণত এক থেকে ১৬ বছর বয়সী ব্রাহ্মণ কন্যার পূজা করা হয়। অনেকের মতে দুই থেকে ১০ বছর বয়সী কন্যাদেরও পূজা করা যায়।
শ্রীরামকৃষ্ণের বাণী অনুযায়ী, “সব নারী ভগবতীর এক একটি রূপ। শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর প্রকাশ সবচেয়ে স্পষ্ট।” তাই অষ্টমী বা নবমীতে প্রতিমার পাশে কুমারীকে বসিয়ে পূজা করা হয়ে থাকে।