বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) তহবিল সংকটের কারণে মায়ানমারে ১০ লাখ মানুষ খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছে। আগামী মাস থেকে দেশটির ১০ লাখের বেশি মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে না বলে গতকাল শুক্রবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এক বিবৃতিতে ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, সংঘাত বৃদ্ধি এবং প্রবেশাধিকারে একাধিক নিষেধাজ্ঞার ফলে মায়ানমারে এমনিতেই খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো বেশ কঠিন। এর মধ্যে সহায়তা হ্রাসের কারণে সংকট আরো ঘনীভূত হবে। তহবিল সংকটের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি সংস্থাটি। এ ছাড়া এই সংকটের নেপথ্যে বিশ্বব্যাপী মার্কিন সহায়তা হ্রাসে ট্রাম্পের আদেশের প্রভাব রয়েছে কি না সে বিষয়েও খোলাসা করেনি ডব্লিউএফপি।
মায়ানমারে ২০২১ সালে নির্বাচিত সরকারকে উত্খাত করে ক্ষমতায় আসে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর দেশব্যাপী বিদ্রোহ দেখা দেয়। তখন থেকেই জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে দেশটি ভয়াবহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পার করছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, দেশটির প্রায় দুই কোটি মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। এ ছাড়া দেশটির প্রায় দেড় কোটি মানুষ চরম খাদ্য সংকটে আছে।
ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, এই খাদ্য সংকটের ফলে দেশজুড়েই মানুষ ভুক্তভোগী হবে। মায়ানমারের অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত এক লাখ রোহিঙ্গাসহ একাধিক গোষ্ঠীর মানুষ খাদ্যের জন্য পুরোপুরিভাবে ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা সামনের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মৌসুম নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে। এই সময়ে চাষাবাদ প্রাকৃতিকভাবেই কম হয় বিধায় খাদ্য সংকটের ধাক্কা আরো তীব্র হতে পারে।
মায়ানমারে খাদ্য সংকটের তীব্রতা কতটা ভয়াবহ তা স্পষ্টভাবে জানা যায় না। এর পেছনে জান্তা সরকারের প্রভাব রয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে গত বছর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, খাদ্য সংকট নিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে ত্রাণকর্মীরা জান্তা সরকারের বাধার মুখে পড়ে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর আক্রমণে মায়ানমারের একদল জান্তা সেনা থাইল্যান্ডের সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে। গতকাল ওই সেনাদের ঘাঁটি থেকে উত্খাত করা হলে তারা সীমান্তে পালিয়ে যায় বলে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনী জানিয়েছে।