হামাসের কাছে থাকা ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার পর পাল্টা উদ্যোগে আড়াইশ’ গুরুতর সাজাপ্রাপ্ত বন্দিসহ মোট প্রায় ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। সোমবার (১৩ অক্টোবর) জিম্মি বিনিময়ের এই পদক্ষেপের পর মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের স্বাগত জানাতে পরিবার ও স্বজনরা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে জড়ো হন।
নিজেদের প্রিয়জনকে ফিরে পেয়ে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা মনে করে আতঙ্কিত হন এবং এখনও বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তির দাবি জানান।
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির ভিত্তিতে হামাস প্রথমে ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়। এরপর দুটি বাসে করে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে মুক্তির পরও তারা জানান, কারাগারে অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তাই এখনও যারা বন্দি রয়েছেন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এদিন মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েলে যান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আকাশ শান্ত, বন্দুক নীরব, সাইরেন থেমে গেছে—অবশেষে পবিত্র ভূমিতে শান্তি ফিরছে।” তার ভাষায়, “এটি ছিল ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের জন্য এক দীর্ঘ দুঃস্বপ্নের অবসান।”
তবে ভাষণ চলাকালে প্রতিবাদী স্লোগান তুলে হট্টগোল করেন আইনপ্রণেতা আয়মান ওদেহ। তিনি “ফিলিস্তিনের মুক্তি চাই” ও “জেনোসাইড” লেখা কাগজ প্রদর্শন করেন।
নেসেটে ভাষণ শেষে ট্রাম্প মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে যোগ দেন। মধ্যপ্রাচ্যের স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে সেখানে ইউরোপীয় ও মিশরীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
এই সম্মেলনে ইসরায়েল ও হামাসের কোনো প্রতিনিধি যোগ দেয়নি। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও অংশ নেয়নি। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন। ইসরায়েলের আপত্তি সত্ত্বেও গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।