একসময় শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যচ্যালেঞ্জ ছিল অপুষ্টি। তবে আজ সেই ধাঁচের চ্যালেঞ্জ কিছুটা কমলেও নতুন উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিয়েছে স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন। বিশেষজ্ঞরা এটিকে বিশ্বের একটি নতুন মহামারি হিসেবে বর্ণনা করছেন।
ইউনিসেফের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২২ সালে প্রতি পাঁচজন শিশুর একজন (প্রায় ২০%) স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনে ভোগা। বিপরীতে, অপুষ্টির হার কমে ১০% এর নিচে নেমেছে। ২০০০ সালে অবস্থার উল্টো পরিস্থিতি ছিল, তখন অপুষ্ট শিশুর হার প্রায় ১৩% ছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ২৫ এর বেশি হলে তা অতিরিক্ত ওজন এবং ৩০ এর বেশি হলে স্থূলতা হিসেবে ধরা হয়। আগে শৈশবকালীন স্থূলতা উন্নত দেশগুলোর সমস্যা হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু বর্তমানে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলিতেও শিশুদের ওজন দ্রুত বাড়ছে।
শিশুদের স্থূলতার প্রধান কারণ:
-
অতিরিক্ত তেল-মশলাদার, প্যাকেটজাত ও রাস্তার খাবার খাওয়ার অভ্যাস।
-
খেলাধুলা ও শারীরিক কার্যকলাপের অভাব।
-
কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
-
বাবা-মায়ের উৎসাহে ফাস্টফুড খাওয়ার প্রবণতা।
-
মোবাইল, ট্যাব বা স্ক্রিন আসক্তি।
-
অতিরিক্ত চিনি ও মিষ্টিজাতীয় খাবারের ব্যবহার।
এ ফলেই দেখা দিচ্ছে গ্যাস, অলসতা, এবং ছোট বয়সেই ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’। সমীক্ষা অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার শিশু ও তরুণরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। মেদ শুধু ত্বকের উপরে নয়, পাকস্থলীর ভেতরও জমে। এতে অগ্ন্যাশয়ে চাপ পড়ে, রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
বাবা-মায়েদের সতর্কবার্তা:
-
চিনিযুক্ত পানীয়, পিৎজা, বার্গার, চিপ্সের মতো খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় না রাখুন।
-
ছোট থেকেই নিয়ম-কানুন শেখান, হেলথ ড্রিঙ্ক বা চকোলেট দিয়ে অভ্যাস তৈরি করা থেকে বিরত থাকুন।
-
শিশুদের নিয়মিত শরীরচর্চা ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।