দীর্ঘ ১০ মাসের টানা দরপতনের ধাক্কা কাটিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। সূচক ও লেনদেনের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফিরছে আস্থা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, চলতি দেড় মাসের ব্যবধানে সূচক প্রায় ৫১৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। দৈনিক লেনদেন, যা নেমে গিয়েছিল আড়াইশ’ কোটি টাকায়, এখন বেড়ে প্রায় ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। বাজার মূলধনও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা বড় বিনিয়োগকারীরাও আবার বিনিয়োগে ফিরছেন। ফলে লেনদেন ও বাজারের গতি দুটোই বাড়ছে। তবে এই ধারা স্থায়ী করতে ভালো মানের শেয়ারের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ আলী বলেন, “লেনদেন বাড়ছে — এটি ইতিবাচক দিক। তবে বাজারকে তার নিয়মেই চলতে দিতে হবে, হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। যেন কেউ রঙ প্লে করতে না পারে, সেই নজরদারিও থাকতে হবে।”
বিনিয়োগকারীরাও বলছেন, বাজারের স্থিতিশীলতা ফিরতে শুরু করেছে। একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ফিরছে। নতুন বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহী হচ্ছে। আশা করছি বাজার নিজস্ব গতিতেই এগোবে।”
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) জানিয়েছে, বাজারে কোনো অযাচিত হস্তক্ষেপ নেই। বরং সুশাসন নিশ্চিতে আইন সংস্কার ও নতুন নিয়ম প্রয়োগ করা হচ্ছে।
বিএসইসির পরিচালক আবুল কালাম বলেন, “আমরা দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন নীতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছি। আইপিও, মিউচুয়াল ফান্ড, মার্জিন ঋণসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে সংস্কার আনা হয়েছে। যার ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরেছে।”
তিনি আরও জানান, কেউ যেন কারসাজি করে বাজার অস্থির করতে না পারে, সেদিকে কমিশন কঠোর নজর রাখছে।