দুর্নীতির আখড়া খাদ্য অধিদপ্তরে তথ্য সংগ্রহ, ভিডিও ধারণ ও সরাসরি সম্প্রচারে বাঁধা প্রদানের লিখিত আদেশ দিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলা খাদ্য কর্মকর্তা। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মৌখিক নির্দেশ দেন জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের নিজস্ব হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। আজ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের খাদ্য গুদামে অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে গুদাম কর্মকর্তা বাঁধা দেন ও ওই লিখিত আদেশ দেখান।
ইতিপূর্বে জেলা খাদ্য বিভাগের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে ডিবিসিসহ একাধিক মিডিয়ায় প্রচার ও প্রকাশ করে। পরে দুদক খাদ্য অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়ে নিউজের সত্যতাসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি প্রমাণ পায়। এ বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের আরও অনিয়ম, দুর্নীতি যাতে প্রকাশ না পায় ও সকল অপরাধ ধামাচাপা দিতে খাদ্য অধিদপ্তর এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।
রোববার দুপুরে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা যাচাই করতে ভ‚ঞাপুর উপজেলা খাদ্য গুদামে যান ডিবিসি নিউজ। এ সময় উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়াও কোন তথ্য বা ভিডিও ধারণ করা যাবে না বলে বাঁধা প্রদান করেন। এছাড়া তথ্য অধিকার আইনের আশ্রয় ব্যতীত কোন প্রকার তথ্য না দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান গুদাম কর্মকর্তা। পরে তিনি জেলা খাদ্য কর্মকর্তা তাদের হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে লেখা নির্দেশনা প্রেরণ করেন জেলা কর্মকর্তা লেখেন ‘এইমাত্র ডিজি মহোদয়ের সাথে কথা বললাম। কোন সাংবাদিক গুদামের টেরিটোরিয়ার মধ্যে ঢুকে লাইভ করার কোন সুযোগ নাই। গুদামের অভ্যন্তরে ঢুকে কোন সাক্ষাৎকার এবং কোন লাইভ করতে দিবেন না। এতে মহাপরিচালক মহোদয়ের সদয় সম্মতি রয়েছে। যদি সাক্ষাৎকার এবং লাইভ করতে হয় তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন নিতে হবে। যেহেতু আমাদের গুদাম কেপিআই এরিয়া। আপনারা মনে রাখবেন আমরা সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। মন্ত্রণালয়ের এই সংগ্রহ কার্যক্রমকে সবাই মিলে আমরা সফল করব। এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’
সুজনের কথা –
জেলা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খান মোহাম্মদ খালেদ বলেন, কেপিআই এরিয়ায় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারবেন না, এটা সাংবাদিকরা জানেন। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যে বার্তাটি দিয়েছেন তা সাংবাদিকদের দায়িত্বশীলতাকে অপমানিত করা হয়েছে। নিজেদের দায়িত্বশীলতাকেও অপমানিত করা হয়েছে। এমন বার্তা দিয়ে নিজেদের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়ার অপপ্রয়াস বলে সাধারণ মানুষ মনে করে। বিষয়টি নিন্দনীয়।
সংবাদ সংগ্রহে বাঁধা দেয়ার নির্দেশকের বক্তব্য –
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভুঞা মুঠোফোনে বলেন, কেপিআই এলাকায় প্রবেশ নিষেধ। সাংবাদিকরা কোন এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে তা সাংবাদিক ও খাদ্য কর্মকর্তারা জানেন- এমন প্রশ্ন করলে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভুঞা ফোন কেটে দেন।