টাঙ্গাইলের সখীপুরে চকলেটের লোভ দেখিয়ে আট বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষন করার অভিযোগ উঠেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শ্রমিক নেতার নাম ফজলু মিয়া (৪০)। তিনি উপজেলার প্রতিমা বংকী তালুকদার পাড়া (পশ্চিমপাড়া) এলাকার আমজাদ আলীর ছেলে এবং দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে ফজলু মিয়াকে আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা ও জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য টাঙ্গাইল পাঠিয়েছে। মামলার বিবরণ ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত শ্রমিক দল নেতা ফজলু মিয়া সম্পর্কে ওই ছাত্রীর চাচাতো মামা। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার প্রতিমা বংকী গ্রামের সিএনজি চালক ও দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহবায়ক ফজলু মিয়া তার চাচাত বোনের দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ুয়া শিশু কন্যাকে মাদ্রাসায় নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পথিমধ্যে চকলেট খাওয়ানোর কথা বলে ফুসলিয়ে বনের ভেতর নিয়ে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে ওই ছাত্রী মাদ্রাসায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিবারকে ডেকে আনেন। শিশুটি সব ঘটনা খুলে বললে তাৎক্ষনিক শিশুটির পরিবারকে ও পুলিশকে অবহিত করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সামনেই ওই শিশু শিক্ষার্থী নিজের মুখে শারীরিক নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে।
সত্য-মিথ্যা যা-ই হোক, এর চেয়ে বেশি কিছু আমরা জানি না। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সখীপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আবুল কাশেম সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রী ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তার মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমরা ওই ছাত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষা ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য টাঙ্গাইল আদালতে নেয়া হয়েছে।
আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন, তাঁকে ধরার চেষ্টা চলছে। এদিকে এ ঘটনার ছড়িয়ে পড়লে সখীপুর উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মতিন মিয়া ও সদস্য সচিব বাবুল মিয়া এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ফজলু মিয়াকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সখীপুর উপজেলা শ্রমিক দলের আহবায়ক মতিন মিয়া বলেন, কোন ব্যক্তির অপকর্মের দায় দল নিতে পারে না, নেবে না।
ধর্ষক ফজলুকে শ্রমিক দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও তিনি ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম ভূঞা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় শিশুর মা নার্গিস আক্তার বাদী হয়ে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।