বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স এম এ হামিদ ও নার্সিং সুপারভাইজার সৈয়দা শামীমা-এই দু’জন ডাইরেক্টর জেনারেল নার্সিং সার্ভিসেস (ডিজিএনএম)-এর নিয়মের তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ওয়ার্ড ইনচার্জসহ হাসপাতালে বেশ কিছু বিষয় পরিবর্তন করে নিজেদের সুবিধা মতো চালাচ্ছেন।
তাদের কারণে সিনিয়র নার্সরা চাকুরী প্রকৃত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না।
তারা মোটা অংকের অর্থ ও স্বজনপ্রীতি করে জুনিয়র নার্সদের প্রধান্য দিচ্ছেন। এছাড়াও রয়েছে কিছু অনৈতিক চাহিদা।
ডিজিএনএম-এর নতুন নির্দেশনায় হাসপাতালের সাধারণ নার্সের আস্থা ছিল কিন্তু ঘটেছে তার উল্টো।
এ নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সকল নার্সের মধ্যে সেবা-তত্ত্বাবধায়ক এবং বিতর্কিত নতুন ইনচার্জের তালিকা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণ নার্সরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের নানা প্রকার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বেশ কিছু অনিয়মের মধ্যে কয়েকজন সুপারভাইজার ইতিপূর্বে ইনচার্জ এর দায়িত্ব থাকাকালীন তাদের বিভিন্ন অপকর্মের শাস্তি হিসেবে উল্টো পদোন্নতি পেয়ে অফিসে সুপারভাইজারের দায়িত্ব পেয়েছেন।
ইতিমধ্যে অনেকে স্বঘোষিত আবার অনেকে টাকার বিনিময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সুপারভাইজার হয়ে বসে আছেন।
পরিস্থিতির সার্বিক বর্ণনা –
জানা যায়, টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল-এর ওয়ার্ড ইনচার্জের পরিবর্তন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অনিয়ম চলে আসছে।
সম্প্রতি এ নিয়ে ডাইরেক্টর জেনারেল নার্সিং সার্ভিসেস (ডিজিএনএম) নার্সদের সুবিধার জন্য কিছু নিয়ম করে দেন।
কিন্তু হাসপাতালের দুই ব্যক্তিসহ কিছু অসাধু কর্মকর্তা ডিজিএনএম-এর নিয়মের তোয়াক্কা না করে একই ব্যক্তিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দুই বছরের অধিক সময় দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে সিনিয়রদের প্রাধান্য না দিয়ে অনেক জুনিয়রকে অজ্ঞাত কারণে দায়িত্ব দিয়ে আসছেন তারা।
ডাইরেক্টর জেনারেল নার্সিং সার্ভিসেস (ডিজিএনএম) নিয়ম অনুযায়ী সিনিয়র থাকা সময়ে জুনিয়রদের ওয়ার্ড ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
হাসপাতালের স্টাফ নার্স এম এ হামিদ ও নার্সিং সুপারভাইজার সৈয়দা শামীমা ২/১ জন মিলে ওয়ার্ড ইনচার্জ সহ হাসপাতালে বেশ কিছু বিষয় পরিবর্তনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ ধরনের অনিয়ম করে নিজেদের সুবিধার জন্য অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে নার্সদের পরিবর্তন করছেন।
ডিজিএনএম-এর স্মারক নম্বর-ডিজিএনএম/শা৩/৪টি-১৪/২০১৬/৩৩২৭, ১৩.০৬.২০১৭ ইং তারিখে তন্দ্রা শিকদার (অতিরিক্ত সচিব) মহাপরিচালক নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ঢাকা স্বাক্ষরতি এক প্রজ্ঞাপনে জানা যায়, দুই বছর অন্তর অন্তর ওয়ার্ড ইনচার্জ পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রকার দৃশ্যমান ফলাফল লক্ষ করা যায়নি।
স্মারক নং ৪৫.০৩.০০০০.৩০১.১১.০০১.১৯/ ৩৮৭/১(১০০) ১৬-০৬-২০২০ইং তারিখে সিদ্দিকা আক্তার (অতিরিক্ত সচিব) মহাপরিচালক, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ঢাকা এবং মোহাম্মদ আবদুল হাই পিএ, পরিচালক (প্রশাসন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ) কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ার্ড এর ইনচার্জ পরিবর্তনের কথা বলা হয়।
অথচ হাসপাতালে নতুন সেবা তত্ত্বাবধায়ক নতুন ওয়ার্ড ইনচার্জের তালিকা তৈরি করে লিখিত আকারে স্থায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা করেন।
কিন্তু নতুন সেবা তত্ত্বাবধায়কের তৈরিকৃত নতুন ওয়ার্ড ইনচার্জের তালিকার মধ্যে ডিজিএনএম কর্তৃক যে নির্দেশনা দেওয়া থাকে তা চরমভাবে ব্যত্যয় ঘটে।
সাধারণ নার্সদের চাওয়া পাওয়া মধ্যে বিস্তর ফারাক –
হাসপাতালের সাধারণ নার্সের আস্থা ছিল যে, এবার একটা আমুল পরিবর্তন ঘটবে কিন্তু ঘটেছে তার উল্টাটা।
এ নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সকল নার্সের মধ্যে সেবা-তত্ত্বাবধায়ক এবং বিতর্কিত নতুন ইনচার্জের তালিকা নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণ নার্সরা প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের নানা প্রকার হুমকী দেওয়া হচ্ছে।
নার্সিং সুপারভাইজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে আছে নার্সিং সুপারভাইজার নিয়ে বেশ কিছু অনিয়মের মধ্যে কয়েকজন সুপারভাইজার ইতিপূর্বে ইনচার্জ এর দায়িত্ব থাকাকালীন তাদের বিভিন্ন অপকর্মের শাস্তি হিসেবে উল্টো পদোন্নতি পেয়ে অফিসে সুপারভাইজারের দায়িত্ব পেয়েছেন।
ইতিমধ্যে অনেকে স্বঘোষিত আবার অনেকে টাকার বিনিময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সুপারভাইজার হয়ে বসে আছেন।
যা নার্সিং নলিস অ্যান্ড সার্ভিসেস এর পরিপন্থী, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর মহাখালী ঢাকা,এর এক বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, নার্সিং সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার বদলি পদায়ন ও পদোন্নতি ইত্যাদি সকল কিছু করার ক্ষমতা শুধুমাত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর অন্য কোন স্থায়ী অথবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নয়।
দুইজন ব্যতীত (দেওয়ান আতিক এবং লুৎফর রহমান) ছাড়া অন্যকেউ (নার্সিং সুপারভাইজার) বছরের পর বছর তারা কেউ রাত্রিকালীন ডিউটি করেন না।
যা বলছেন সাধারণ নার্স ও কর্তৃপক্ষ –
এ নিয়ে সাধারণ নার্সরা কথা বলতে গেলে তাদের সাথে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি করে বলেন, রাত্রিকালীন ডিউটি না করার জন্য আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছি।
আবার অনেক সময় যে ব্যক্তি প্রতিবাদ করতে যায় তাকে শাস্তি হিসেবে ওয়ার্ড পরিবর্তন করে অপেক্ষাকৃত বিজি (busy) ওয়ার্ডে দেওয়া হয়।
নার্সিং সুপারভাইজার অফিসে যাদেরকে নাইট ডিউটি দেয়া হয়, তাদের অনেকেই রাতে হাসপাতালে থাকে না।
সকালে অফিসে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে বারবার অফিস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন লাভ হচ্ছে না।।
সম্প্রতি নার্সিং সুপারভাইজার অফিসের বাহিরেও অনেক নার্স রয়েছে যাদের রাত্রে ডিউটি করা কথা থাকলেও তারা ডিউটিতে আসেন না।
জানতে চাইলে জানান, সেবা তত্ত্বাবধায়ক তাদের শুধু দিনের বেলায় ডিউটি করার জন্য অনুমতি দিয়েছেন।
সেবা তত্ত্বাবধায়ক জানান, স্থায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের রাত্রে ডিউটি না করার অনুমতি দিয়েছেন।
এসব কারণে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে সেবক ও সেবিকাদের মাঝে ক্রমশ ক্রোধের সৃষ্টি হচ্ছে।
অনেকে চাপের মুখে অনিয়ম সহ্য করে এই প্রতিবেদকে কোন প্রকার তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
শুধুমাত্র চাকরি টিকিয়ে রাখতে তারা কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে সেবা তত্ত্বাবধায়ক নাজমা পারভীন জানান, যদি কেউ দুই বছর কর্মরত থাকে তাহলে সে আর কোন ওয়ার্ডে ইনচার্জে দায়িত্বে থাকতে পারবে না।
কিন্তু দুই বছরের কম হলে আলোচনা সাপেক্ষে দেওয়া যেতে পারে।
যদি কোন অনিয়ম থেকে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স এম এ হামিদ ও নার্সিং সুপারভাইজার সৈয়দা শামীমা বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সম্পাদনা – অলক কুমার