মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মাকড়াই দিবস উপলক্ষে কাদেরিরা বাহিনী মুক্তিযোদ্ধার মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী৷ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আর মুক্তিযুদ্ধ এক না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর শেখ হাসিনা এক না, গোপালগঞ্জের শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা বানিয়েছি বুকের তাজা রক্ত দিয়ে। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যায়নি, তিন বাহিনীর সহযোগিতায় যু্দ্ধ বিমানে তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার বিকেলে মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মাকড়াই দিবস উপলক্ষে কাদেরিরা বাহিনী মুক্তিযোদ্ধার মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের সিদ্দিকী যা বলেন –
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর মাথায় প্রস্রাব করা আমার মাথায় প্রস্রাব হয় নাই। স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই জিয়াউর রহমানের মাথায় প্রস্রাব করা হয় নাই। বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার মাথায় প্রস্রাব করা হয়েছে। এর বিচার চাই, বিচার চাই, বিচার চাই৷ বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যারা ভেঙেছে, মনে রাখবেন তাদেরও বাড়ি ঘর রয়েছে। তাদেরও কবর রয়েছে, তাদেরও স্মৃতিসংঘ রয়েছে। তাদের কবর হাতে নিয়ে ঘুরতে পারবেন না। বাড়িঘর হাতে নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই সীমা অতিক্রম করবেন না।
তিনি এনসিপির নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কে একজন বলেছেন (নাহিদ ইসলাম) বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা নন৷ বঙ্গবন্ধু যদি জাতীর পিতা না হন, তাহলে আপনার পিতা কে। কোন সন্তানের পিতা না থাকলে সে সন্তান সম্মানি সন্তান হয় না। সে সন্তান কুলাঙ্গার হয়। একটু ভেবে চিন্তে বলবেন৷
তিনি বলেন, যারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন করেছেন, শেষ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন, আমি তাদের অন্তরেরস্থল থেকে সমর্থন করি। কারণ শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে। আপনাদের মুরাদে শেখ হাসিনার পতন হয় নাই। জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আপনারা যদি অন্যায় করতে যান, আমি কাজী সিদ্দিকী বেঁচে থাকতে তা লড়াই করবো৷ আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন তার শাস্তি দিন, মাথা পেতে নিবো। শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা এক নয়। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জয় বাংলা থাকবে।
ড. ইউনুসকে নিয়ে যা বলেন –
ড. ইউনুসকে নিয়ে তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনুসকে আমি সম্মান করতাম। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ভেঙেছে আপনি দেখেছেন, আপনার গ্রামীন ব্যাংকের বিরুদ্ধে সমস্ত সরকার বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাড়িয়েছিলো, আমি কাদের সিদ্দিকী না দাঁড়ালে আপনার অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেতো। আপনার এক বছরের শাসনে সেটি আর হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে এবং নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিনতি ১০ গুন খারাপ হবে৷
মুক্তযোদ্ধা নিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাদের সম্মানই এক লাখ টাকা করতে হবে। তবে এ বছরই তাদের সম্মানী ৫০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি৷ আমরা ভিক্ষা চাই না সম্মানি চাই। যুদ্ধ বড় কঠিন জিনিস। যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। জীবনের মায়াও ছিলো না। আমি কোন দারগা পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আল্লাহ ও রসুলকে ভয় করি। আমি মানুষকে ভয় করি। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্মান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি।
আরো যারা বক্তব্য রাখেন –
মুক্তিযুদ্ধের সাবেক জেলা কমান্ডার ফজলুর হক বীরপ্রতীকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ঘাটাইল উপজেলার সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, ঘাটাইল উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান প্রমুখ৷ এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষক জনতার লীগের নেতা কর্মীদের উপস্থিত ছিলেন।