অনেকেই প্রতিদিন মাত্র ৬ ঘণ্টা ঘুম নেন এবং ভাবেন, এটি তাদের দৈনন্দিন কাজ চালাতে যথেষ্ট। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতি রাতে ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। কম ঘুম মূলত হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভারতীয় কার্ডিওলজিস্ট ডা. অমিত কুমার জানান, “৬ ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট নয়। দীর্ঘমেয়াদে এটি হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যদিও কেউ নিজেকে ‘জাগতিক’ মনে করেন, তবুও হার্ট নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
হার্টের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ঘুমের সময় শরীর একটি ‘মেরামতের চক্র’ শুরু করে। রক্তচাপ কমে, হৃদস্পন্দন ধীরে হয়, স্ট্রেস হরমোন হ্রাস পায় এবং টিস্যুগুলো পুনরায় মেরামত হয়।
ডা. কুমার বলেন, “প্রতিদিন ৭ ঘণ্টার কম ঘুমালে এই প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। ফলস্বরূপ হার্ট অতিরিক্ত চাপের মধ্যে পড়ে, যা উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং রক্তনালির ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে।”
ঘুমের অভাবের চারটি প্রভাব
১. উচ্চ রক্তচাপ: শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
২. বর্ধিত প্রদাহ: রক্তনালিতে প্রদাহ বেড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
৩. হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত: স্ট্রেস হরমোন বেড়ে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে, যা হার্টে অতিরিক্ত চাপ দেয়।
৪. অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন: হৃদয়ের বৈদ্যুতিক সংকেত বিঘ্নিত হতে পারে, অ্যারিথমিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
হার্ট ও সুস্থতার জন্য কত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন?
ডা. কুমার জানান, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। তবে ঘুমের গুণগত মান ও ঘুমের ধরনও গুরুত্বপূর্ণ।
-
একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করুন।
-
ঘুমানোর আগে স্ক্রিন ব্যবহারে সীমা রাখুন।
-
ঘুমের ঘর অন্ধকার ও শান্ত রাখুন।
তিনি আরও বলেন, “আপনি হয়তো ছয় ঘণ্টা ঘুমে সকালে ক্লান্ত অনুভব করেন না, কিন্তু হার্ট নীরবে এর মূল্য দিচ্ছে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ও ভালো মানের ঘুম স্বাস্থ্য রক্ষায় অপরিহার্য।”