অলক কুমার : টাঙ্গাইল সদর উপজেলাধীন বাণিজ্যিক কেন্দ্র করটিয়া হাটে ৫৮৫ টাকার একটি ভিটি লক্ষাধিক টাকায় ব্যবসায়ীদের বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া হাটে অভিযান পরিচালনা করে এই সত্যতা পায়।
দুর্নীতি দমন কমিশন টাঙ্গাইল জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন – ১৫ দিনের মধ্যে সেই রিসোর্টের গেইট সরানোর নির্দেশ!
তিনি বলেন, দুদক জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান ও কোর্ট পরিদশর্ক জাহিদুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত একটি এনফোর্সমেন্ট টিম টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া হাটে অভিযান পরিচালনা করেছে।
দুদক টিম সরেজমিনে উক্ত এলাকা পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল নিজের এবং নিজেদের পরিবারের সদস্যদের নামে সরকারের কাছ থেকে একাধিক ভিটি বরাদ্দ নিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে কয়েক হাজার টাকা থেকে শুরু লক্ষাধিক টাকায় ভাড়া দিয়ে থাকেন।
নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যবসায়ী সরকারি ৫৮৫ টাকা ফি পরিশোধ করে এক বছরের জন্য একটি ভিটি বরাদ্দ পাবেন।
আরো পড়ুন – বাসাইলে রিসোর্ট ও স্পা সেন্টারের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কেউ কেউ নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের নামে ৮-১০ টি ভিটি বরাদ্দ নিয়েছেন।
পজিশনভেদে এসব ভিটি কয়েক হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকায় তারা ভাড়া দিয়েছেন।
ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ভিটি বরাদ্দ না পেয়ে চড়ামূল্যে ভিটি ভাড়া নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
ফলশ্রুতিতে কাপড়ের মূল্য বাড়িয়ে অতিরিক্ত খরচ সমন্বয় করছেন। ফলে ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতাগণ।
প্রকৃত ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন তারা বহুবার আবেদন করেও ভিটি বরাদ্দ পাননি, কিন্তু সরকারি চাকরিজীবী, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা ভিটি বরাদ্দ পেয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবরে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করবে।
আরো পড়ুন – হত্যাকারী আইনের আওতায় আসবে কি? শঙ্কায় নিহত শিহাবের পরিবার
বরাদ্দকারী কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –
এই বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ্ জাহান আনসারী বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে দুদকের একটি টিম আমার কাছে এসেছিলো।
দোকান বরাদ্দে দুর্নীতির বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দোকান বরাদ্দ হলেও আমার কোন দুর্নীতির খবর জানা নাই, বিধি মোতাবেক বরাদ্দ দিয়েছি।
এখন কে বা কারা করেছে, সেইটা দুদক তদন্ত করে বের করতে পারে, দেখতে পারে; নিশ্চয় তাদের কাছে প্রমাণ আছে।
আর আমার কাছে আসে সর্বশেষ ফাইল।
নিয়ম যে রকম- সার্ভেয়ার তদন্ত করে দেখে ব্যবসায়ী হলে তারপর সার্ভেয়ার তসিলদার “ইয়ে” করে; তারপর এসিল্যান্ড, এগুলো “ই” করে, তারপর উপজেলায় মিটিং হয়, উপজেলা কমিটি মিটিং করে আমার কাছে পাঠাইলে আমি ফাইনাল এপ্রোভাল দেই।
আরো পড়ুন – নিবিড় তদন্তের জন্য শিহাব হত্যা মামলা সিআইডিতে- এসপি
দুদক খুঁজে বের করুক, কে দুর্নীতি করল, কে কি করল; সেটা দুদকেরই দায়িত্ব।