মুখ ফুটে বলতে পারেন না- হে জাতির পিতা, তোমায় ভালোবাসি! তাই তো রং-তুলির আঁচড়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে আঁকেন বঙ্গবন্ধুর ছবি।
মুখে ভাষা নেই। জন্ম থেকেই বধির মুন্নি।
হৃদয়ে তার বাংলাদেশের স্থপতি। অপলক তাকিয়ে থাকেন আঁকা ছবির দিকে। তার চাহনিতে ফুটে ওঠে মহান নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
নিজে কথা বলতে না পারলেও তার আঁকা ছবি কথা বলে। চোখের দেখায় অবলীলায় আঁকতে পারেন সব ধরনের ছবি। এমনই এক প্রতিভাবান চিত্রশিল্পী বাকপ্রতিবন্ধী সুইটি আক্তার মুন্নি (১৯)। জন্ম শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাহনীয়া গ্রামে।
বাবা পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল মালেক ও গৃহিণী মা সুফিয়া বেগমের তিন মেয়ের মধ্যে বড় মুন্নি। বাবার চাকরির সুবাদে পুরো পরিবারের স্থায়ী বাস এখন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পৌর এলাকার সবুজবাগে। মুখে কথা ফোটার আগেই মাত্র ছয় মাস বয়সে মুন্নি আক্রান্ত হয় নিউমোনিয়ায়।
পরিবারের ধারণা, হয়তো এ রোগই কেড়ে নিয়েছে তার মুখের ভাষা। সুস্থ-স্বাভাবিক ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন মুন্নি। এখন তিনি ভূঞাপুর সরকারি ইব্রাহিম খাঁ কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পড়ছেন ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। কিন্তু স্বপ্ন তার চারুকলায় পড়া।
তার মা জানান, মুন্নি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিলেন, কিন্তু সুযোগ হয়নি। এ বছর ফের পরীক্ষা দেবে। তৃতীয় শ্রেণি থেকে তার ছবি আঁকা শুরু। ছবি আঁকার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার নেই। তবু চোখের দেখায় হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় ফুটিয়ে তুলতে পারেন মানুষ, প্রকৃতিসহ নানা ধরনের ছবি। ছবি দেখে হুবহু ওই ছবিটিই আঁকতে পারেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকতে বেশি পছন্দ করেন। তার মা জানান, মুন্নির অনেক ইচ্ছা একদিন ঢাকায় গিয়ে আর্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। সে বিজয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে আনবে পুরস্কার।