নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচন। নানান জল্পনা কল্পনা শেষে হবে এই দিন।
তার আগে হিসাব যেন মিলতেই চাচ্ছে না। সব হিসাবের শেষ হিসাব বিজয়ী হওয়া।
সেই লক্ষ্য নিয়েই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নানান রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী চেয়ারম্যান হলেও পূর্ণ মেয়াদের চেয়ারম্যান হতে পারছেন না। তবে এই উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হলে সামনের নির্বাচনে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন তিনি।
প্রার্থীরা একদিকে যেমন ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা করছেন, অন্যদিকে প্রতিপক্ষকে মনস্তাত্তি¡ক ও ভোটারদের কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টাও করছেন।
সবদিক ঠিকঠাক থাকলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলে যে কেউ হতে পারে চেয়ারম্যান।
দলীয় প্রতীকের নির্বাচন হওয়া স্বত্তেও নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চার প্রার্থী।
প্রার্থী ও ভোটারদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচন।
আর এই নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত দুই চেয়ারম্যানের ছেলেও।
জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, আগামী ২০ অক্টোবর টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ করা হবে।
২৮ হাজার ভোটারের ইউনিয়নটির কেন্দ্র সংখ্যা ১০টি।
চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি অসুস্থতা জনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ঘারিন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমীন খান খোকন।
পরে ১৫ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান শূণ্য এ পরিষদের উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে জেলা নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনিয়নের সদ্য প্রয়াত ও তিনবারের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন খান খোকনের ছেলে তোফায়েল আহাম্মেদ।
ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়নের আরেক প্রয়াত ও দুইবারের চেয়ারম্যান এস এম আবুল কাশেমের ছেলে এস এম মারুফ হাসান সুমন।
আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আবুল হোসেন সরকার আবু ।
এছাড়াও বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন সৈয়দ শাহিন।
কেমন প্রার্থী চান এলাকাবাসী –
নির্বাচনী এলাকা ঘুড়ে ও স্থানীয়দের বক্তব্যে জানা যায়, ইউনিয়নের নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক তৎপর চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সমর্থকরা।
কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত অবধি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা।
প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ এ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচন।
বিএনপির মনোনিত প্রার্থীসহ নির্বাচনী এলাকা জুড়ে প্রতিটি প্রার্থীর চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা।
এ নিয়ে পল্লী চিৎকসক রমজান আলী, মজনু, খোদেজা বেগমসহ কয়েকজন ভোটার বলেন, উন্নয়ন আর গ্রামবাসীর বিপদে আপদে যাকে সব সময় পাওয়া যাবে এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করবেন তারা।
তাদের দাবি অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচন।
প্রার্থীদের চিন্তা-ভাবনা, অভিযোগ ও চাওয়া –
অভিযোগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মারুফ হাসান সুমন বলেন, গত নির্বাচনে আমার বাবা প্রয়াত চেয়ারম্যান এস এম আবুল কাশেম বিজয়ী হওয়া স্বত্তে¡ও তাকে ফেল করানো হয়েছিল।
এরপরও নির্বাচন কমিশনের দেয়া অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করার আশ্বাসের উপর বিশ্বাস রেখে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছি।
বিজয়ী হলে তার বাবা ও ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যানের অসমাপ্ত কাজ গুলো সমাপ্ত করবেন।
আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন সরকার (আবু) বলেন, গত নির্বাচনেও আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলাম।
ওই নির্বাচনে আমাকে ১৮৬ ভোটে ফেল দেখানো হয়েছে।
তবে আমার বিশ্বাস আমি বিজয়ী হয়েছিলাম। এবার নির্বাচন কমিশনের দেয়া অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাসে আমি আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছি।
ভোটারদের যে সমর্থন পেয়েছি তাতে আমার বিশ্বাস আমি বিজয়ী হব।
বিজয়ী হলে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সুদ, ঘুষ, ধর্ষণ, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি ইউনিয়ন উপহার দিব।
এ ইউনিয়নের হাতিলা, পয়লা, সাটুরিয়া আর ঘারিন্দা এ ৪টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন তিনি।
বিএনপি মনোনিত প্রার্থী সৈয়দ শাহীন বলেন, যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হয় তবে এই সময়ে ধানের শীষে বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।
আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির কোন সুযোগ নেই।
যারা এমন অপপ্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন সেটি ভীতিহীন। অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেনও তিনি।
অবাধ, সুষ্ঠু আর নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান বলেন, ভোট কেন্দ্রের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দুই প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য থাকবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট। সম্পাদনা – অলক কুমার