আদালত প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশু অপহরণের পর হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ডসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ওই ৬ যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামীর মধ্যে ৩ জনকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১২টায় টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান এ রায় দেন।
এছাড়াও প্রত্যেককে আসামীকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা ধার্য করেন তিনি।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে, ঢাকার ধামরাইয়ের চর চৌহাট তারা মিয়ার ছেলে মিল্টন (২২), শামছুল হকের ছেলে বাহাদুর মিয়া (২২) ও মির্জাপুর উপজেলার সুজানিলজা গ্রামের বাছেদ মিয়ার ছেলে রনি মিয়া (২৫)।
আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত হলেন, ঢাকার ধামরাইয়ের চৌহাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শাহিনুর এলাইজ শাহা (৩০), শশ্বধরপট্টি গ্রামের মরেজের ছেলে জহিরুল ইসলাম (২০) ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে আব্দুল মালেক (৩৫)।
আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিনজন হলেন, ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের তাজেল মিয়ার ছেলে আরিফ (২৮), ও মির্জাপুর উপজেলার আমরাইল তেলীপাড়ার জব্বার মল্লিকের ছেলে জাকির হোসেন (২৮) ও ধামরাই উপজেলার চর চেহৈাট গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে শামীম মিয়া (২৫)। এদের মধ্যে আরিফ পলাতক রয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ –
অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি খোরশেদ আলম জানান, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি মির্জাপুরের হাড়িয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে অপহৃত হয় দুই শিশু।
তারা ঢাকার ধামরাইয়ের চর-চৌহাট গ্রামের প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের প্রবাসী আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)।
পরদিন ২৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা।
পরে ২৯ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে মির্জাপুরের হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে নিখোঁজ দুই শিশুর জবাইকৃত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৩০ জানুয়ারি (শনিবার) শিশুর মা জোসনা বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ জুন আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
দুই জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় আদালত।
এরপর ৮ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। অপর আসামী আরিফ পলাতক রয়েছেন।
১১ জনের নামে পুলিশ চার্জশীট প্রদান করে। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ও মনোয়ারাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী খোরশেদ আলম টাঙ্গাইল জেলা জজ আদালত রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবী জানান।
রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানিয়েছেন আসামী পক্ষের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা।
১৬ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এ মামলার রায় ঘোষণার করলেন বিচারক। সম্পাদনা – অলক কুমার