টাঙ্গাইল সদর
,
সংবাদ দাতা
পৌষের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে টাঙ্গাইলের দিগন্ত। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকেই জেলা শহরসহ ১২টি উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বেলা বাড়ার পরও সূর্যের দেখা না মেলায় কুয়াশার দাপট পুরোপুরি কাটেনি, ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন।
সকাল থেকে যমুনা সেতু–টাঙ্গাইল–ঢাকা মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন দেখা দেয়। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে গাড়ি চালাতে বাধ্য হন। এতে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা দেরি করছে। ঝুঁকিপূর্ণ মোড়গুলোতে দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশি তৎপরতাও জোরদার করা হয়েছে।
মহাসড়কে চলাচলকারী নাদের পরিবহনের চালক সুমন মিয়া জানান, ভোর থেকেই স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কুয়াশা পড়েছে। সামনে কী আছে তা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ায় গাড়ি চালাতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একই অভিজ্ঞতার কথা জানান সিলেট থেকে পাবনাগামী ট্রাক চালক আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পূর্ব অংশে সড়ক সংস্কারের কাজ চলমান থাকায় কুয়াশার মধ্যে দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে গেছে।
যমুনা নদীবেষ্টিত ভূঞাপুর ও কালিহাতী উপজেলার বিভিন্ন অংশে ঘন কুয়াশার কারণে নৌযান চলাচলও সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যমুনা বহুমুখী সেতু এলাকায় কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলো ধীরগতিতে চলাচল করছে।
শীত ও কুয়াশার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষকরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বোরো ধানের চারা রোপণ ও সবজি ক্ষেতের পরিচর্যায় সমস্যায় পড়ছেন কৃষি শ্রমিকরা। কৃষি বিভাগ থেকে কুয়াশাজনিত রোগবালাই থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান, অতিরিক্ত কুয়াশা থাকলেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার টাঙ্গাইলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে। শীতের তীব্রতা ও কুয়াশাজনিত দুর্ঘটনা এড়াতে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।











