দেড়শ টাকা দামের প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। তারা বলছেন, ভ্যাট আরোপের ফলে এই পণ্যের দাম বাড়বে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর চাপ তৈরি করবে এবং এই শিল্পের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকে থাকা কঠিন করে তুলবে। গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি তুলে ধরেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) শতাধিক পণ্যের ভ্যাট বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। সে ঘোষণা অনুযায়ী, দেশে ১৫০ টাকা মূল্যের প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতির সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২০২৪ সালের ২৭ মে থেকে সরকার ১৫০ টাকা বা তার কম মূল্যের প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দিয়েছিল। নতুন আদেশে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হওয়ায় পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এর ফলে হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকার দাম বাড়বে, যা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
দাম বাড়লে এই পণ্যের চাহিদা কমে যাবে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলোর উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এর প্রভাবে বহু কর্মী তাদের কর্মসংস্থান হারাবেন।’ এছাড়া নেতারা দাবি করেন, ভ্যাট আরোপের কারণে পরিবেশগত সমস্যাও তৈরি হতে পারে। এই শিল্প মূলত রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে পুরোনো চপ্পল ও পাদুকা থেকে নতুন পণ্য তৈরি করে। যদি উৎপাদন কমে যায়, তাহলে রিসাইক্লিংও হ্রাস পাবে। ফলে ব্যবহারের অনুপযোগী চপ্পল ও পাদুকা রাস্তাঘাটে পড়ে থেকে পরিবেশ দূষণ বাড়াবে।
সমিতির সহ-সভাপতি জানান, দেশের পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, যা বছরে কয়েক কোটি জোড়া পণ্য তৈরি করে এবং হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে। এই শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা ভ্যাট অব্যাহতির পূর্বের সুবিধা পুনর্বহালের জোর দাবি জানান। তারা বলেন, যদি দাবি পূরণ না করা হয়, তাহলে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তারা প্রতিবাদ জানাবেন।