বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস হলো রপ্তানি আয় ও প্রবাসী রেমিট্যান্স। বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র সংকট রয়েছে, যা মোকাবেলায় প্রবাসী আয়ের গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশি প্রবাসীরা বছরে প্রায় ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, যা সম্ভাব্য আয়ের মাত্র ৪০ শতাংশ। বাকি ৬০ শতাংশ বিভিন্ন হুন্ডি বা অবৈধ মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স সুষ্ঠুভাবে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য সরকার ২.৫ শতাংশ প্রেরণ প্রণোদনা দিচ্ছে, তবে তা যথেষ্ট নয়।
প্রস্তাবিত সমাধান:
স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা:
-
প্রবাসী রেমিট্যান্সকে ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত করতে দেশে ভিন্ন ভিন্ন মার্কেটের জন্য আলাদা টাকা-ডলার রেট প্রণয়ন করা।
-
হুন্ডি রেটের তুলনায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি সুবিধাজনক রেট প্রদান।
-
বিদেশের দূতাবাস ও বাংলাদেশি ব্যাংকের সহযোগিতায় রেমিট্যান্স নজরদারি ও দেশভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা:
-
প্রবাসী কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ, যাতে দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠানো অভ্যাস গড়ে ওঠে।
-
বিদেশে দক্ষ শ্রমিক তৈরি, কম খরচে তাদের প্রেরণ ও বৈধ অভিবাসী সংখ্যা বৃদ্ধি।
-
দেশের রেমিট্যান্স সঠিকভাবে বৃদ্ধি পেলে আমদানি ব্যয় মেটাতে যথেষ্ট ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ থাকবে, ট্রেড গ্যাপ কমবে এবং অর্থপাচার কমে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
প্রবাসী আয়ের যথাযথ ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা সংকট নিরসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান কৌশল হতে পারে।