সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মনিষা রানী বিশ্বাস। আজ বৃহস্পতিবার বরগুনার বামনায় বামনা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় মনিষা। পরে পরীক্ষা শেষে স্বজনদের সঙ্গে বাবার অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় অংশ নেয়। নিহত নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী দৈনিক খোলাকাগজ পত্রিকার বামনা উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
এর পাশাপাশি তিনি বামনা সদরে বন্ধুজন মোবাইল সেন্টার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ি থেকে ব্যবসার কাজে মোটরসাইকেলে যাওয়ার পথে শহরের কলেজ রোডস্থ ভেন্টার বাড়ি নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পুলিশের পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। এসময় তার মোটরসাইকেলটি ধুমরে মুচরে যায়। দুর্ঘটনায় মাথা ও পায়ে মারাত্মকভাবে জখম হয়ে সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ও নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার দিনগত রাত সোয়া আটটার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় পরিবারে শোকের মাতম চলছে। বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি আবু নাসের মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। নিহত সাংবাদিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় হয়ে পড়েছে। নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী সুবর্না বিশ্বাস স্বামীকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়। স্বামীর মরদেহের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মনিষা বিশ্বাস আমার কলেজ থেকে এবছর স্নাতক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বাবার অকাল মৃত্যুতে তার পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ থেমে নেই। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা শোকাহত।