ভূঞাপুর সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের ভ‚ঞাপুর লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীর জন্য করোনাকালীন সময়ে আসা টাকা ফেরত দেয়া হয়নি।
তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা বুঝিয়ে পেয়েছে মর্মে স্বাক্ষর নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাসান আলীর বিরুদ্ধে ১৫ জন প্রভাষকের কাজ থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীতকরণের জন্য আড়াই লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজে করোনাকালীন অটোপাস করা ৭৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য প্রায় ২৭ হাজার টাকা ফেরত আসে।
এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৩৫০ টাকা করে দেয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের টাকা ফিরত না দিয়ে উল্টো স্বাক্ষর নিয়েছে।
এতে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের জানানো হয় এই টাকা কলেজের উন্নয়ন কাজে ব্যবহৃত হবে।
এছাড়া সম্প্রতি ওই কলেজের ১৫ শিক্ষকের প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে উন্নীতকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজের কথা বলে আড়াই লাখ টাকা নেন কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলী।
শুধু তাই নয়, গত ২০১৯ সালে কলেজে ল্যাব সহকারী নিয়োগে অষ্টমী নামের এক প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা অধ্যক্ষ গ্রহণ করলেও আজ অবদি তার নিয়োগ হয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজে মার্কসীট নিতে গেলে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া হয়।
তাতে লেখা রয়েছে, আমি ৩৫০ বুঝিয়া পাইয়া স্বাক্ষর করিলাম। তবে আমাদের কোন টাকা দেয়া হয়নি।
প্রতিবাদ করলে কলেজের অধ্যক্ষ জানান এই সামান্য টাকা দিয়ে তোমরা কি করবে এটা কলেজের উন্নয়ন কাজ করা হবে।
লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রী কলেজের হিসাব রক্ষক লিয়াকত আলী বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য টাকা আসছিল।
তবে কয়েকজনের স্বাক্ষর আমি নিয়েছি কিন্তু টাকা দেয়া হয়নি।
বাকি শিক্ষার্থীদের কলেজের অন্যজন স্বাক্ষর নিয়েছে। তবে অধ্যক্ষ স্যার বিস্তারিত তথ্য দিতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, প্রভাষক পদ থেকে সহকারী অধ্যাপকের জন্য অধ্যক্ষ কলেজের ১৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে টাকা না দিলে নাকি কাজ হয় না। তাই শিক্ষকরা অধ্যক্ষের হাতে আড়াই লাখ টাকা দেয়। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –
লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাসান আলী বলেন, অল্প কিছু টাকা আসছিল; অনেক শিক্ষার্থী নিয়েছে আবার অনেকেই নেয়নি।
তবে কলেজের প্রভাষকদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি মিথ্যা বানোয়াট। এছাড়া নিয়োগের জন্য কোন টাকা নেয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য আসা টাকা তাদের দিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষকরা কি কাজে অধ্যক্ষকে টাকা দিয়েছেন এই বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি।
এছাড়া ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগের বিষয়টি আমাকে বলা হয়েছিল।
আমি এই উপজেলায় আসার আগেই নিয়োগ দেয়া হয়েছিল; তবে আমি যেহেতু জানিনা, নিয়োগের বিষয়টি তাই না করে দেয়া হয়েছে। সম্পাদনা – অলক কুমার