টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক নুরুল ইসলামকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে শনিবার ঘোড় দৌঁড় শেষ করে আগের থেকেই ওৎ পেতে ছিলেন জামাল হোসেন।
সঙ্গে নিয়েছিলেন মেয়ের জামাই ফজর আলী এবং অটোচালক শাহ আলমকে।
নুরুল ইসলামের অপেক্ষায় সন্ধ্যা পর্যন্ত রাস্তার পাশেই বসে ছিলেন তারা।
পরে নুরুল ইসলাম ঘোড় দৌঁড় শেষে বাড়ি ফেরার পথে দেওজানা বাজারে পৌছলেই তাকে জোড়পূর্বক শাহআলমের ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় তুলে নেয়।
ওই অটোরিকশাতে মেয়ের জামাই ফজর আলী হাত-পা চেপে ধরে এবং শ্বশুর জামাল হোসেন শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে।
মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা নুরুল ইসলামের লাশ সাগরদিঘী-গারোবাজার পাকা সড়কের পাশে লক্ষিন্দর এলাকায় জঙ্গলে ফেলে যায়।
এমনই একটি লোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লক্ষিন্দর এলাকায়।
নিখোঁজের তিন দিন পর সোমবার রাতে নুরুল ইসলাম (৪৫) নামে ওই ঘোড়াগাড়ি চালকের লাশ উদ্ধার করে ঘাটাইল থানার পুলিশ।
পরে এ ঘটনায় রাতেই আটক করা হয় উপজেলার সুন্দইল গ্রামের জামাল হোসেন (৪৫); তার মেয়ের জামাই দেওজানা গ্রামের ফজর আলী (২৪) এবং একই গ্রামের অটোচালক শাহ আলমকে (২২)।
তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে ও পরে মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
নিহত নুরুল ইসলাম উপজেলার সংগ্রামপুর ইউনিয়নের ছনখোলা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
পুলিশ জানায়, শনিবার (১৬ জানুয়ারি) উপজেলায় কুড়ালিয়া বাইদ এলাকায় ঘোড়দৌড় দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় নুরুল।
পরদিন তার ছেলে আনিছুর রহমান থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ঘটনার তদন্ত নামে পুলিশ।
পরে উপজেলার সুন্দইল গ্রামের জামাল হোসেন (৪৫), তার মেয়ের জামাই দেওজানা গ্রামের ফজর আলী (২৪) এবং একই গ্রামের অটোচালক শাহ আলমকে (২২) আটক করা হয়।
এলাকাবাসী ও পুলিশের বক্তব্য –
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম জানান, শনিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামিরা নুরুল ইসলামকে দেওজানা বাজার থেকে জোড়পূর্বক ব্যাটারি চালিত অটোরিকশায় তুলে নেয়। পরে তারা আটোতেই শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর তারা নুরুল ইসলামের লাশ উপজেলার লক্ষিন্দর এলাকায় সাগরদিঘী-গারোবাজার পাকা সড়কের পাশে জঙ্গলে ফেলে যায়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতকাল সোমবার রাতে তার হাত-পা বাধা লাশ উদ্ধার করা হয়।
এলাকাবাসী জানায়, নিহত নুরুল ইসলাম ও জামাল হোসেনের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে। জামাল হোসেন গ্রীস প্রবাসী। তার স্ত্রীর সাথে নুরুল ইসলামের পরকীয়ার সম্পর্ক ছিলো। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ আলোচনা ও সমালোচনাও চলছিলো। স্ত্রীর পরকীয়ার এমন কান্ড মেনে নিতে পারেননি তিনি। সংসারে এ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া চলতো। এ কারনেই এ ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।
তবে কি কারণে খুন করা হয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে। সম্পাদনা – অলক কুমার