টাঙ্গাইলের গোপালপুরে যুবদল নেতাকে ডেকে নিয়ে থাপ্পর দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেলের উপর। পরে আহতবস্থায় যুবদল নেতা আমিনুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমিনুল ইসলাম উপজেলার আলমনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে গোপালপুর থানার একটি একটি কক্ষে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
যুবদল নেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, থানার এসআই রাসেল মিয়ার থাপ্পড়ে আলমনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামের কানের পর্দা ফেটে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তিনি কানে শুনতে পাচ্ছেননা বলে অভিযোগ করছেন। গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
জানা যায়, আলমনগর ইউনিয়নের নবগ্রাম উত্তর চরপাড়ার মৃত মান্নানের দুই ছেলে, মিঠু আকন্দ ও মিজু আকন্দের জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সোমবার সালিসি বৈঠক বসে। কিন্তু সালিশে মিঠু আকন্দ অনুপস্থিত ছিলেননা। তিনি পরদিন মঙ্গলবার বাড়িতে পুলিশ নিয়ে হাজির হন। এ স্থানীয়রা ক্ষুব্দ হয় তারা পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে এই ঘটনায় থানা থেকে ফোন করে ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামকে থানায় ডেকে নেয়া হয়। এসময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত ভিপির উপস্থিতিতে থানা অফিসার ইনচার্জের রুমে বৈঠক বসে। সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে যুবদল নেতা আমিনুল ও এসআই রাসেলকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়।
আহত ও বিএনপি নেতার বক্তব্য –
আহত আমিনুল ইসলাম বলেন, রুম থেকে বেরিয়ে আসার পর আরেকটি রুমে নিয়ে এসআই রাসেল তাকে সজোরে থাপ্পড় দেন। এরপর আর কানে শুনতে পাচ্ছি না। কানে তীব্র ব্যথা অনুভবের পাশাপাশি কানের পর্দা ফেটে গেছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক কাজী লিয়াকত জানান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ওপেল চৌধুরীসহ আলমনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে মিমাংসার জন্য থানার ওসির রুমে বৈঠক করছিলেন। এসময় এসআই রাসেলের সাথে ওই দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। বিষয়টি মীমাংসা করতে রাতেই বৈঠক হবে।
চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ –
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খাইরুল আলম জানান, আমিনুল ইসলামের কানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যেহেতু তিনি কানে না শোনার কথা বলছিলেন, তাই পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল রেফার করা হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য –
গোপালপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেল বলেন, জরুরীসেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সেখানে আমিনুল অভিযোগকারীদের পুলিশের সামনে মারধর করে। পরে তাকে সেখান থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ওসির নির্দেশে তাকে থানা হাজতে রাখা রয়েছিল কিছু সময়ের জন্য। সেখানে তাকে মারধর করার কোন ঘটনা ঘটেনি।
গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন বলেন, যুবদল নেতা আমিনুল পুলিশের কাজে বাঁধা দিয়েছিলেন। পরে তাকে থানায় ডেকে আনা হয়েছিল। পরে দায়িত্বরত এসআইয়ের সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে নেতাদের ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।