দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ ঘিরে দেশজুড়ে প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। কোরবানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ দা, ছুরি, চাপাতি ও ছেনি শান ও প্রস্তুতের জন্য জমে উঠেছে কামারপাড়া।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের কামারপল্লীসহ বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দা-ছুরি তৈরিতে দিন-রাত ব্যস্ত কামাররা। লোহা পুড়িয়ে পিটিয়ে চলছে সরঞ্জাম তৈরির কাজ, টুংটাং শব্দে মুখর গোটা এলাকা।
ঈদ সামনে রেখে এসব কামার দোকানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত শ্রমিক। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে শান দেওয়া ও সরঞ্জাম তৈরির কাজ।
চান্দিনা বাজারে শান দিতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, “সারা বছর দা ব্যবহার হলেও কোরবানির পর ছুরি-চাপাতি পড়ে থাকে অবহেলায়। ঈদের আগে তাই শান দিতে নিয়ে আসি।” তবে তিনি অভিযোগ করেন, কোরবানির সময় শান দিতে খরচ বেড়ে যায়—২০ টাকার কাজ তখন ৩০-৪০ টাকা লাগে।
চাপাতি কিনতে আসা ক্রেতা মফিজুল ইসলাম জানান, “গত বছরের তুলনায় দাম অনেক বেশি। পুরনো চাপাতির খোঁজও পাওয়া যায় না, তাই নতুন কিনতে হচ্ছে।”
দোকানদার নান্টু কর্মকার বলেন, “লোহার দাম, কয়লার দাম সবই বেড়েছে। বছরের অন্য সময় কাজ না থাকলেও এই মৌসুমে অতিরিক্ত লোক দিয়ে রাত জেগে কাজ করতে হয়। তাই খরচ কিছুটা বেশি।”
চান্দিনার কামার মাখন কর্মকার জানান, এখন শুধু কামার সম্প্রদায় নয়, অন্যান্য পেশার মানুষকেও এ কাজে নিতে হচ্ছে বেশি পারিশ্রমিকে। “ঈদে সবাই কিছুটা বেশি নেয়, তবে অনেকে খুশি হয়ে বেশি টাকাও দিয়ে যান,” বলেন তিনি।
কুমিল্লা মহানগরী ও ১৭টি উপজেলায় ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় ৩০০ কামার দোকান, যেখানে ঈদকেন্দ্রিক ব্যস্ততা এখন চরমে। কোরবানির ঈদ ঘিরে কামারপাড়ার এই ব্যস্ততা দেশের ঐতিহ্যবাহী শ্রমঘন শিল্পের চিত্রও তুলে ধরে।