বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের আওয়ামী লীগার হওয়ার শখ হয়েছে বলে এলাকায় ব্যাপক হাস্যরস ও মুখরোচক গল্পের জন্ম দিয়েছে; সমানতালে চলছে সমালোচনার ঝড়।
আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতারা তাকে “নব্য আওয়ামী লীগার”, কেউ “হাইব্রিড” কেউ আবার “কাওয়া” বলেও অভিহিত করছেন বলে জানা গেছে।
সেই ব্যক্তি হলো, আওয়ামী লীগ যুগ্ম-আহবায়ক দাবিদার কিন্তু দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দেওয়ান মারুফ শামীম।
দেওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আওয়ামী লীগ যুগ্ম-আহবায়ক দাবিদার মোহাম্মদ দেওয়ান মারুফ শামীম আমার সংগঠনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।
তিনি আরো জানান, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে সে বিএনপি থেকে চলে যায়; বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বা সেও পদত্যাগ পত্র দেয়নি।
বিএনপি’র এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ঘাটাইলের বর্তমান সাংসদের ঘনিষ্ট সহচর হিসেবে চলাফেরা করে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহীদ দিবসে মোহাম্মদ দেওয়ান মারুফ শামীম এলাকাবাসীর দোয়া ও সমর্থন চেয়ে পোস্টার ও ফেস্টুন তৈরি করে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
পোস্টার ও ফেস্টুনে মোহাম্মদ দেওয়ান মারুফ শামীম নিজেকে দেওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহবায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী দলীয় প্রার্থী শহিদুল ইসলাম লেবুর নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে কাজ করেন।
২০১৬ সালের ৪ জুন অনুষ্ঠিত দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মো. আব্দুর রাজ্জাকের নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে কাজ করেছেন।
ওই নির্বাচন দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল ইসলাম আরিফ (আনারস) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাইনুদ্দিন তালুকদার তারু’র (আনারস) পক্ষে কাজ করেছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য –
দেওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট রেজাউল করিম বাদশা জানান, আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহারকারী শামীম পারিবারিক ভাবে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।
আমাদের সংগঠনের তার কোন প্রকার প্রাথমিক সদস্য পদও নেই। বিষয়টির আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম লেবু জানান, ২০১৬ সালের দেওপাড়া ইউপি নির্বাচন ও ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শামীম আওয়ামী লীগের বিরোধীতা করেছে।
শামীম বিএনপি জামায়েত জোট সরকারের সময়ে পুরান ঢাকার একজন বিএনপি দলীয় ক্যাডার ছিল। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
বর্তমানে সে ঘাটাইলের সাবেক এমপি আমানুর রহমানের সহচর হিসেবে চলাফেরা করে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে; আমাদের সংগঠনের কোন পর্যায়ের কোন সদস্য নয়।
সে পোস্টার ও ফেস্টুন ছাপিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত মোহাম্মদ দেওয়ান মারুফ শামীম বলেন, প্রয়াত নজরুল ইসলাম খান (সামু) আমাকে যুগ্ম-আহবায়ক বানিয়ে গেছেন।
তাছাড়া বর্তমান এমপি জানেন, আমি আওয়ামী লীগের কোথায় আছি বলেই তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। সম্পাদনা – অলক কুমার